২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বিশ্বনবীর (সা.) বর্ণনায় মহামারি নেমে আসে যেসব কারণে

আপডেট: মার্চ ২৬, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

যে কোনো মহামারিতে আক্রান্ত হওয়ার পাঁচটি কারণ বর্ণনা করেছেন বিশ্বনবী (সা.)। তিনি (সা.) সাহাবিদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন, যাতে তারা এসব অন্যায় কাজে জড়িয়ে না পড়ে। হাদিসে এসেছে-

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বললেন, হে মুহাজিররা! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও।

(১) যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, তখন সেখানে মহামারি আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব রোগের উদ্ভব হয়, যা আগের লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।

(২) যখন কোনো জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে তখন তাদের ওপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বিপদ-মুসিবত।

(৩) যখন কোনো জাতি জাকাত আদায় করে না তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি ভু-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকতো তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না।

(৪) যখন কোনো জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের ওপর বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাদের সহায়-সম্পদ সবকিছু কেড়ে নেয়।

(৫) যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব (কোরআন) মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাজিলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন।’ (ইবনে মাজাহ)।

বর্তমান পৃথিবীতে কার্যত মহামারি দেখা দেয়ার সবগুলো কারণই বিদ্যমান। অশ্লীলতা-বেহায়াপনায় চারদিক যেমন সয়লাব তেমনি পৃথিবীজুড়ে চলছে ওজনে কম দেয়ার হিড়িক।

সম্পদশালীরা তাদের মালের যথাযথ জাকাত আদায় করছে না। গরীব অসহায় মানুষের ক্ষুধা ও দারিদ্রতার চিৎকারে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠলেও সে আওয়াজ পৌছে না সমাজের বিত্তশালীদের কানে। অথচ ওই ব্যক্তির জাকাত ফরজ। যার কিছুটা দিলেই গরবি-অসহায়ের অভাব মিটে যায়। যখনই মানুষ জাকাত দেয়া থেকে বিরত হয়, তখনই মহান আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে বৃষ্টি দেয়া বন্ধ রাখেন।

আল্লাহ তায়ালা মানুষের জন্য জীবন ব্যবস্থা হিসেবে দিয়েছে মহাগ্রন্থ কোরআন। এ কোরআনের বিধান মেনে চলা প্রত্যেক নারী-পুরুষের জন্য আবশ্যক। যা মানুষ বিভিন্ন অজুহাতে ছোট নির্দেশও ছেড়ে দিচ্ছে। অথচ আল্লাহর বিধানের ব্যতিক্রম হলেই আল্লাহর পক্ষ থেকে দুনিয়া নেমে আসে শাস্তি। সাধারণ নিরাপরাধ মানুষও এ শাস্তি ভোগ করে। তাদের ওপর নেমে আসে জুলুম-অত্যাচার। হাদিসের ঘোষণাও এমনই।

আবার যখনই মানুষ কোরআন বিমুখ হয়ে যাবে। কোরআনের বিধান অনুসরণ না করে নিজেদের মনগড়া বিধানে বিচার কাজ করে তখন মানুষ জুলুম অত্যাচারের শিকার হবে। আর তখন মাজলুম ও আল্লাহর সঙ্গে কোনো বাধা থাকে না। আর তাতে আল্লাহর আজাব ও গজব দুনিয়াতে নেমে আসে। হাদিসে এ আজাব-গজবের কথাই বলা হয়েছে। হাদিসে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার উম্মতের জন্য তা থেকেই আশ্রয় লাভের নিমিত্তে আল্লাহর কাছে প্রার্থণা করেছেন।

প্রাণঘাতী মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবের এ সময়ে প্রত্যেক মানুষের উচিত, আল্লাহর কাছে এ অন্যায় কাজগুলো থেকে বিরত থাকা। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করা।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসে বর্ণিত ৫টি কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর বিধান পালনে যথাযথ নিয়ম ও সতর্কতা পালন করার তাওফিক দান করুন। মহামারি করোনাভাইরাস থেকে বিশ্ববাসীকে হেফাজত করুন। আমিন।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network