৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার

রাসেলস ভাইপার এখন পরিচিত নাম, আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ

আপডেট: জুন ২২, ২০২৪

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

রাসেলস ভাইপার | ছবি: সংগৃহীত 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বদৌলতে রাসেলস ভাইপার এখন সবচেয়ে পরিচিত ও আতঙ্কের নাম। বাংলায় এ সাপকে চন্দ্রবোড়া নামে ডাকা হয়। বিলুপ্তপ্রায় বিষধর এ সাপটির নতুন করে বংশবিস্তার ও দ্রুত দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ সাপের কামড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেলেও মোট কতজন মারা গেছে তার সঠিক উত্তর পাওয়া যায়নি। রাসেলস ভাইপার আতঙ্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমনভাবে ছড়িয়ে যে সাপের কামড়ে কেউ মারা গেলেই ধারণা করা হচ্ছে রাসেলস ভাইপারের কামড়েই তার মৃত্যু হয়েছে।

কথায় আছে ’বাঘের দেখা সাপের লেখা।’ সাধারণত আক্রমণের শিকার না হলে সাপ কাউকে কামড়ায় না। তবে অনেক সময় বাসাবাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় সাপের কামড়ে অনেকেই মারা যান। সারাবছর জুড়েই সাপের কামড়ে কমবেশি মানুষ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়। তবে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে এ ঘটনা বেশি ঘটে। সাপের কামড়ে মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। সাপে দংশন করলে ওঝা বা কবিরাজের কাছে নয়। দ্রুত নিতে হবে হাসপাতালে। তবে রাসেলস ভাইপার সম্পর্কে ছড়ানো হচ্ছে নানা ধরনের গুজব। বলা হচ্ছে মানুষকে তাড়া করে কামড়াচ্ছে রাসেলস ভাইপার। না দেখেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পূর্বের কোনো এক সময়ের ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে দেখা মিলল রাসেলস ভাইপার।

শুক্রবার (২১শে জুন ২০২৪) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে রাসেলস ভাইপার দেখতে পাওয়ার ছবি পোস্ট করা হয়। মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। তবে খোঁজ নিয়ে না জানা যায় ঘটনাটি আরও মাস ছয়েক আগের ঘটনা। যা দেখা গিয়েছিল জীবননগর উপজেলার মেদিনীপুর সীমান্ত এলাকায়। তবে আসলেই সেটি রাসেলস ভাইপার কিনা তা জানা যায়নি।

একইদিন সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার কামারপাড়া এলাকায় রাসেলস ভাইপার পিটিয়ে মারার ছবি পোস্ট করা হয়। জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। গণমাধ্যম কর্মীদের অনেকেই বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এটি গুজব। কয়েকদিন আগে ওই এলাকার এক কৃষক মাঠে গিয়ে বিষধর সাপের দংশনে মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে একই মাঠে একটি গোখরো সাপকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। সেই সাপের ছবি পোস্ট না করে অন্য ছবি পোস্ট করে রাসেলস ভাইপার বলে দাবি করা হয়। ফেসবুকে ঢুকলেই এখন শুধু রাসেলস ভাইপারের ছবি পোস্ট হতে দেখা যাচ্ছে। খোঁজখবর না নিয়ে অনেকেই রাসেলস ভাইপার দেখার কথা ছবিসহ ফেসবুকে পোস্ট করছেন। মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। ফেসবুক গ্রুপে গুজব না ছড়াতে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অ্যাডমিন মডারেটরদের দেওয়া হয়েছে নির্দেশনা। গুজব ছড়ালে নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।

এদিকে শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেশবাসীর উদ্দেশে জরুরি বার্তায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে রাসেলস ভাইপারের উপদ্রব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিভেনমসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ মজুত রাখা হয়েছে। এছাড়া, সকল স্বাস্থ্যকর্মীকে এ বিষয়ে যথাযথ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। রাসেলস ভাইপার নিয়ে নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে জানিয়ে ভিডিও বার্তায় সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাসেলস ভাইপার নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না। গুজবে কান দেবেন না।

আমিনুর রহমান নয়ন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার। 

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network