২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

কেয়ামতের দিন যে সাত শ্রেণির মানুষ আরশের ছায়ায় স্থান পাবে

আপডেট: জুলাই ১০, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

আপডেট নিউজ ডেস্ক: প্রতিটি মানুষকে কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। সেই দিন সবার কাজকর্মের হিসাব নিবেন রাব্বুল আলামীন। হাশরের ময়দানের অবস্থা এমন ভয়াবহ হবে যে, সূর্য মানুষের কাছে চলে আসবে। প্রচণ্ড গরমে এবং পেরেশানীতে মানুষের এত পরিমাণ ঘাম ছুটবে যে, কারও কারও ঘাম পায়ের টাখনু গিরা সমান, কারও কারও হাঁটু পর্যন্ত, কারও কারও মুখ পর্যন্ত হয়ে যাবে। এই গরম থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর আরশের ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না।

সেই বিভীষিকাময় মুহূর্তে মহান আল্লাহ কিছু মানুষকে তাঁর রহমতের ছায়াতলে আশ্রয় দেবেন। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যেদিন আল্লাহর (রহমতের) ছায়া ছাড়া
আর কোনো ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা তাঁর আরশের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। (বুখারি, হাদিস : ৬৬০)

সেই সৌভাগ্যবান সাত শ্রেণীর মানুষ সম্পর্কে নেওয়া যাক:

ন্যায়পরায়ণ শাসক
এই শ্রেণির লোকদেরকে ভীষণ ভালোবাসেন মহান আল্লাহ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবিচারকারীদের ভালোবাসেন। (সুরা হুজরাত, ৯)

যৌবনে যারা ইবাদত করে
যৌবন আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য অনেক বড় নিয়ামত। এই নিয়ামতকে যারা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, তারাই সফল হবে। সাধারণত যৌবন মানুষকে বেপরোয়া বানিয়ে দেয়, যৌবনের তাড়নায় কেউ কেউ ডুবে যায় পাপের সাগরে। এই যৌবনকে যারা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করবে, তারা কঠিন কিয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের ছায়াতলে আশ্রয় পাবেন।

যাদের অন্তর মসজিদের সঙ্গে লেগে থাকে
মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর আবার মসজিদে আসা পর্যন্ত যাদের অন্তর মসজিদের সাথে লাগানো থাকে। আল্লামা নববী (রহ.) বলেন, মসজিদের সঙ্গে অন্তরের
সম্পৃক্ততার দ্বারা বুঝায়, মসজিদের প্রতি অগাধ ভালোবাসা। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ গুরুত্বসহকারে মসজিদে পড়া। সার্বক্ষণিক মসজিদে বসে থাকা নয়। (উমদাতুল কারি :
৫/২৬১)

যারা পরস্পরকে ভালোবাসে আল্লাহর জন্য
যারা একত্র হয় আল্লাহর জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহর জন্য, এমন ব্যক্তিদেরকে বলা হয়েছে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ বলবেন,
সেসব মানুষ কোথায়, যারা আমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পরস্পর পরস্পরকে ভালোবাসতো। আজ আমি তাদের আমার আরশের ছায়াতলে আশ্রয় দেব। আজকের দিনটা
এমনই যে, আজ আমার ছায়া ছাড়া কোথাও কোনো ছায়া নেই। (মুআত্তায়ে মালিক, হাদিস : ১৭১৮)

আল্লাহর স্মরণে যাদের চোখ থেকে অশ্রু ঝরে
নির্জনে সেসব ব্যক্তি জিকির করে, আর আল্লাহর স্মরণে তাদের দুই চোখ দিয়ে অশ্রুধারা বইতে থাকে। এমন লোকরাই শেষ বিচারের দিনে আল্লাহর আরশের ছায়া লাভ
করবে।

আল্লাহর ভয়ে যারা সুন্দরী নারীর অপকর্মের আহবান প্রত্যাখ্যান করে
যে ব্যক্তিকে কোনো রূপসী নারী অপকর্মের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানায়, কিন্তু সে এ বলে প্রত্যাখ্যান করে যে ‘আমি আল্লাহকে ভয় করি’। সেই সব মুত্তাকিকে মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাঁর আরশের ছায়াতলে আশ্রয় দেবেন।

যারা সম্পূর্ণ এখলাসের সঙ্গে দান-সদকা করে
সেসব ব্যক্তি গোপনে দান করে। অর্থাৎ তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না। তাদের উদ্দেশ্য থাকে, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান-সদকা করা।
মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন এমন লোকদেরকে তাঁর আরশের ছায়াতলে আশ্রয় দেবেন।

উপরোক্ত গুণগুলো একজন মুমিন বান্দার মধ্যেই পাওয়া যায়। আর আমাদের মধ্যে যাদের এই গুণগুলোর অভাব রয়েছে, তাদের চেষ্টা করা উচিত মহান রাব্বুল
আলামীনের পরিপূর্ণ তাকওয়া অর্জনের।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network