২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করার ভয়াবহ পরিণতি

আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২২

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

আপডেট নিউজ ডেস্ক:: অন্যের সম্পদ দখল করা আর জাহান্নামের টিকিট বুকিং দেয়া এক জিনিস। রাসূল সা: বলেছেন, কারো এক বিঘত সম্পদ যদি কেউ আত্মসাৎ করে তাহলে কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহ তার গলায় সাত স্তবক জমিন ঝুলিয়ে দেবেন। ধসাতে থাকবেন তাকে। অন্য সাধারণ গুনাহ করলে বা আল্লাহর হকের সাথে জড়িত কোনো হুকুম লঙ্ঘন করলে এত বড় সমস্যা নেই যত বড় সমস্যা মানুষের সম্পদ অন্যায়ভাবে দখল করলে রয়েছে। কারণ এটি বান্দার হক। আর বান্দার হক নষ্ট করলে সেটি আল্লাহ নিজে মাফ করবেন না। কিন্তু আল্লাহর হক নষ্ট করলে চাইলে আল্লাহ মাফও করতে পারেন, আবার শাস্তিও দিতে পারেন।
দুনিয়াতে যদি আপনি কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেন, কৌশলে নিজের নামে লিখিয়ে নেন, আইল ঠেলে জায়গা বাড়িয়ে নেন, বিদেশ থেকে ভাই টাকা পাঠিয়েছে আপনি কৌশলে সেই টাকা নিজের নামে জমা করেন, এগুলো হারাম। এই আত্মসাৎ আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। কিয়ামতের ময়দানে বাবা-ছেলে কেউ কাউকে চিনবে না।
রাসূল সা: একদিন সাহাবিদের বললেন, ‘তোমরা কি জানো তোমাদের মধ্যে কে সবচেয়ে অভাবী?’ সাহাবিরা বললেন, হে রাসূল! আমরা তো জানি যার সম্পদও নেই টাকাও নেই সে-ই অভাবী। রাসূল সা: বললেন, ‘না সে তো সাময়িক সময়ের অভাবী। অভাব দূর হয়ে যেকোনো সময় সে বড়লোক হয়ে যেতে পারে। আসল অভাবী হলো সেই ব্যক্তি যে অনেক নেক আমল করেছে কিন্তু অন্য বান্দার হক নষ্ট করেছে। কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহ বলবেন, তোমার আমল থেকে দেনা পরিশোধ করো। পরিশোধ করতে করতে আমল শেষ হয়ে যাবে কিন্তু তার দেনা শোধ হবে না। তখন পাওনাদারের গোনাহ ওই সম্পদ আত্মসাৎকারীর ওপর দেয়া হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে দেয়া হবে।’

কারো জমি দখল করা, জাল দলিল করে নেয়া, জমির আইল ঠেলা, বাবার সম্পত্তি থেকে বোনের হক না দেয়া, দাদার সম্পত্তি থেকে ফুফুর হক না দেয়া, স্ত্রীর মোহরানা পরিশোধ না করা ইত্যাদি হলো বান্দার হক নষ্ট করার উদাহরণ। কিয়ামতের দিন আত্মসাৎকারীকে পাওনাদাররা বলবে, দুনিয়াতে তো অনেক গায়ের জোর ছিল তাই শক্তির বাহাদুরি করেছো আজ আহকামুল হাকিমিনের সামনে কোনো কাহিনী চলবে না। তখন কী হবে? জমি তো আর নেই দেবেন কী?
তাসবিহ করে, কুরআন খতম করে কোনো লাভ হবে না যদি মানুষের হক নষ্ট করেন। মুসনাদে আহমাদে এসেছেÑ আল্লাহর আদালতে তিন ধরনের মামলা উঠবেÑ এক. এই মামলা ক্ষমার অযোগ্য। সেটি হলো শিরক করে তাওবা ছাড়া মারা যাওয়া। দুই. এটি হলো আল্লাহ বাদি মামলা। অর্থাৎ আল্লাহর হক সংশ্লিষ্ট বিধান না মানা। সেগুলো আল্লাহ চাইলে মাফ করতে পারেন, চাইলে সাজা দিতে পারেন। তিন. বান্দা বাদি মামলা। কারো হক নষ্ট করা, কাউকে গালি দেয়া, কারো জমি আত্মসাৎ করা এই সব মামলার বিষয়ে আল্লাহ বলবেন, ‘এই মামলা আমার কাছে না। ওই বান্দা যদি তোমাকে ছাড় দেয় তো দিলো আর না দিলে আমি আল্লাহর কিছু করার নেই।’
মনে রাখতে হবে কিয়ামতের ময়দানে কেউ কাউকে ছাড় দেবে না। সুতরাং মানুষের সম্পদ আত্মসাৎ করা যাবে না। কেউ আমল একটু কম করুন, কিন্তু কারো সম্পদ আত্মসাৎ করবেন না।

সম্পাদনায় মো:অলিউল্লাহ খান

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network