আপডেট: মে ১৫, ২০২৫
ঝালকাঠি প্রতিনিধি:: ঝালকাঠির রাজাপুরের শুক্তাগড় ইউনিয়নের ঘিগড়া গ্রামে পাওনা দাবি করা ২০ হাজার টাকা না পেয়ে নারগিস আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূর গাভি কেড়ে নিয়েছেন বেল্লাল নামে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। সেই গাভির এক মাস বয়সী বাছুর কোলে নিয়ে ন্যায় বিচারের আশায় ঝালকাঠি আদালতে হাজির হয়েছেন গৃহবধূ নারগিস। মা ছাড়া হয়ে দুধ না পেয়ে বাছুরটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। বোতলের দুধ ও ভাতের মাড় খাইয়ে তাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। নারগিস বেগম জানান, তার স্বামী আবু বকর দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ। জীবিকার তাগিদে গার্মেন্টসে চাকরি করে কষ্ট করে একটি গাভি কেনেন তিনি। গাভিটির এক মাস বয়সী একটি বাছুরও রয়েছে। হঠাৎ গত বুধবার সকালে স্থানীয় শুক্তাগড় ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল খান স্বামীর ২০ হাজার টাকার পুরোনো ঋণ পাবে দাবি করে গাভিটি নিয়ে যান।
নারগিস বলেন, ‘আমার স্বামী অনেক বছর ধরে নিখোঁজ। আমি কষ্ট করে গরু কিনেছি দুধ বিক্রি করে চলব বলে। এখন সেই গরুটিও নিয়ে গেছে। বাছুরটি দুধ না পেয়ে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’
নার্গিস বেগমের আরও অভিযোগ, স্বামী আওয়ামী লীগের রাজনীতি করায় বেল্লাল ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা না পেয়ে গরুটি নিয়ে গেছে। গরুর বাছুরটি মাকে হারিয়ে নিশ্চুপ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট আমার স্বামী বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর তার মোটরসাইকেলটি নিয়ে যায় বেল্লাল। তার ভয়ে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না।’এ বিষয়ে বিএনপি নেতা মো. বেলাল খান বলেন, ‘৯ বছর আগে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে আবু বকরকে ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। সুদে-আসলে এখন তা ৩০ হাজার টাকা হয়েছে। টাকা না পেয়ে গরুটি নিয়ে এসেছি। তার কাছে কোনো চাঁদা দাবি করা হয়নি। সেই পাওনা টাকা না পাওয়ায় আমি গরু নিয়েছি। টাকা পেলেই গরু ফেরত দিয়ে দেব। আমি কারো মোটরসাইকেল নিইনি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা।’
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মুবিন বলেন, ‘এ ঘটনার সময় আদালতপাড়ায় উপস্থিত ছিলাম। ঘটনাটি সরাসরি দেখেছি, তবে লিখিত কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা মিলে গেলে বেলালের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রাজাপুর সার্কেল) শাহ আলম জানান, এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে এ ঘটনা তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।