আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২৫
নাজমুল হক মুন্না:: বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের দামোদারকাঠি গ্রামে স্ত্রীর তালাকের পর এক যুবকের আধা মন (প্রায় ২০ কেজি) দুধ দিয়ে গোসল করার অদ্ভুত ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। বুধবার সকালে ঘটে যাওয়া ঘটনাটির ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দামোদারকাঠি গ্রামের মো. এসকেন্দার আলী সরদারের ছেলে মো. সজীব সরদার চলতি বছরের ২৫ মে একই গ্রামের কাজলকে পরিবারের অমতে প্রেমের টানে বিয়ে করেন। বিয়ের মাত্র দুই মাস পর জীবিকার তাগিদে সজীব দুবাই গেলেও স্ত্রী কাজলের অনুরোধে দেশে ফিরে আসেন।সজীবের অভিযোগ, দেশে ফেরার পর বিভিন্ন অজুহাতে তার কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হয়। একপর্যায়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ বাড়তে থাকলে শ্বশুরবাড়ির প্ররোচনা ও মায়ের পরামর্শে মাত্র ছয় মাসের মাথায় স্ত্রী কাজল তাকে তালাক দিয়ে দেন।তালাকের পর হতাশায় সজীব অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন করলে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়া সজীবকে ঘিরে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা চলতে থাকে।
পরে স্থানীয়ভাবে সালিশ–বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা হলেও কাজল তালাকের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। সর্বশেষ আনুষ্ঠানিক তালাক কার্যকর হওয়ার পর বুধবার সকালে বাড়ির উঠোনে কয়েকজন স্থানীয়কে নিয়ে আধা মন দুধ দিয়ে গোসল করেন সজীব।
সজীব বলেন,“মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। মন পরিষ্কার করে নতুনভাবে জীবন শুরু করার উদ্দেশ্যেই দুধ দিয়ে গোসল করেছি।”ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন ওই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে তা ভাইরাল হয়ে যায় এবং এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এদিকে স্ত্রী পাখি (ছদ্মনাম) মন্তব্য জানতে তার ব্যবহৃত ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। সাংবাদিকদের সামনেও তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে স্থানীয় আলেমরা ঘটনাটিকে “অপরিকল্পিত ও অপ্রচলিত আচরণ” হিসেবে উল্লেখ করে বলেন,“ইসলামে দুধ দিয়ে গোসলের কোনো বিধান নেই। এমন পরিস্থিতিতে পরিবার ও সমাজের উচিত হতাশ মানুষটিকে মানসিকভাবে সহায়তা দেওয়া।”

