২৫শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

বাকেরগঞ্জে ৩০ লাখ টাকার সেতু নির্মাণ কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন করে ভাগাভাগি

আপডেট: নভেম্বর ২৫, ২০২৫

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

৭ বছর ধরে অসমাপ্ত সেতু পড়ে আছে খালে!

নিজস্ব সংবাদদাতা:: বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি ইউনিয়নের বাদলপাড়া খালের ওপর নির্মাণাধীন ৩০ লাখ টাকার সেতুটি ৭ বছর ধরে অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ২০১৮–২০১৯ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে সুমন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

অভিযোগ উঠেছে—সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ না করেই ঠিকাদার ফারুক গাজী, তৎকালীন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এবং কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রায় ৭ বছর আগে চূড়ান্ত বিল উত্তোলন করে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করেছেন। তবুও সেতুর কাজ আজও সম্পন্ন হয়নি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৮–২০১৯ অর্থবছরে সেতুটি নির্মাণের অনুমোদন দেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। শুরু থেকেই কাজের মান, তদারকি এবং আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। অভিযোগ রয়েছে—উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক গাজী ক্ষমতার অপব্যবহার করে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন করেছেন। সেতুটির ওপরিকাঠামো নির্মাণ হলেও দুই পাশে অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ না করায় বছরের পর বছর সেতুটি খালের পানিতে ডুবে রয়েছে। এতে প্রতিদিন চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।সেতুটি অসমাপ্ত থাকায় বাদলপাড়া গ্রামের হাজারো মানুষকে বিকল্প সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থী, রোগী পরিবহন এবং কৃষিপণ্য আনা–নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, সৃষ্টি হয়েছে স্থবিরতা।

ঠিকাদার ফারুক গাজী অসুস্থ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার ছেলে সুমন গাজী  জানান, “সেতুর কাজ বাবার লাইসেন্সে করা হলেও প্রকল্পে ইউপি সদস্য মজনু জড়িত ছিলেন। তৎকালীন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে এক লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে চূড়ান্ত বিল উত্তোলন করা হয়েছিল। অসমাপ্ত কাজ করার কথা থাকলেও ইউপি সদস্য মজনুই প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।”

আরও জানা যায়, ২০১৮ সালের শেষ দিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বদলি হন। পরে তার স্থলাভিষিক্ত হন আহসান হাবিব। কিন্তু সেতুর কাজ শেষ না করে বিল উত্তোলন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এই দুই কর্মকর্তাই বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ—দায়িত্বশীল দপ্তরের উদাসীনতা ও ঠিকাদারের অনিয়মের কারণেই সেতুটি আজও সম্পন্ন হয়নি। ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে দুর্নীতি তদন্ত এবং সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছেন।

বর্তমান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, “অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ জানান, “৭ বছর আগের দায়িত্বে কে ছিলেন তা জানা নেই। সেতু নির্মাণে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network