২৮শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

চরমোনাই দরবারের লাখো মুসল্লির কলরবে মাহফিল শুরু!

আপডেট: নভেম্বর ২৭, ২০২৫

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

বরিশাল ব্যুরো:: বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর তীরে চরমোনাই দরবারের মাদ্রাসার বিশাল ময়দান লাখো মুসল্লির কলরবে মুখর হয়ে উঠেছে। মাহফিল উপলক্ষে গত সোমবার থেকেই চরমোনাই ময়দানের উদ্দেশ্যে দেশে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য বাস, লঞ্চ ও অন্যান্য যানবাহনে মুসল্লিরা ইতিমধ্যে এসেছে। এছাড়াও চরমোনাইমুখী মানুষের ভিড় শুরু হয় গোটা দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে।

বুধবার সকালেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মাদ্রাসার বিশাল আয়তনের দুটি মাঠ। এরপর জোহরের নামাজ শেষে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিমের উদ্বোধনী বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী এই মাহফিল।

তারই ধারাবাহিকতা হিসেবে বুধবার দুপুরে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে তিন দিনব্যাপী মাহফিল উদ্বোধন করেন।

তবে তিন দিনব্যাপী ইসলামী মাহফিল উপলক্ষে কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত চরমোনাই দরবার শরিফ মাদ্রাসার বিশাল ময়দান লাখো মুসল্লির পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) জোহরের নামাজ শেষে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের উদ্বোধনী বয়ানের মধ্য দিয়ে এই মাহফিলের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। মাহফিল উপলক্ষে এই ময়দানে মঙ্গলবার থেকেই মুসল্লিদের ভিড় শুরু হয়।

বুধবার সকালেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মাদ্রাসার বিশাল আয়তনের দুটি মাঠ। এরপর জোহরের নামাজ শেষে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের উদ্বোধনী বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মাহফিল।

সরেজমিনে দেখা যায়, চরমোনাই দরবারের মাদ্রাসার সুবিশাল মূল মাঠ ও ৩ নম্বর মাঠে সমবেত হয়েছেন লাখো ভক্ত, অনুসারী ও সাধারণ মুসল্লি। মাঠ দুটিকে শামিয়ানায় আবৃত করে দেওয়া হয়েছে। আয়োজকেরা জানান, মঙ্গলবার থেকেই বাস-লঞ্চে এখানে মুসল্লিরা সমবেত হতে শুরু করেন। আজও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা আসবেন। মাহফিল চলবে তিন দিন। এই তিন দিনই মুসল্লিদের স্রোত থাকবে এই মাহফিলে।

উদ্বোধনী পর্বে চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম বলেন, এখানে দুনিয়াবি কোনো উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আসার প্রয়োজন নেই। যদি এমন কেউ এসে থাকেন, তবে নিয়ত পরিবর্তন করে আত্মশুদ্ধির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। মনে রাখবেন, দুনিয়ার মোহই সব অন্যায়ের কারণ।

তিনি বলেন, ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় জীবনকে ইসলামের আলোকে পরিচালিত করলেই সত্যিকারের মুক্তি আসবে। আয়োজকেরা জানান, চরমোনাই দরবারের এই মাহফিলের সূচনা হয়েছিল ১৯২৪ সালে। প্রতিবছর বাংলা মাস হিসাব করে চরমোনাইয়ে অগ্রহায়ণ ও ফাল্গুন মাসে দুটি মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে অগ্রহায়ণে কিছুটা ছোট পরিসরে এবং ফাল্গুন মাসে সবচেয়ে বড় পরিসরের মাহফিল আয়োজন হয়। তিন দিনের এই মাহফিলের শেষ দিন শুক্রবার হওয়ায় ওই দিন চরমোনাই মাঠে দেশের সর্ববৃহৎ জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে ভাষ্য আয়োজকদের।

এরপর শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মাহফিলের সমাপ্তি হবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়ক কে এম শরীয়াতুল্লাহ জানান, তিন দিনব্যাপী মাহফিলে প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় মোট সাতটি প্রধান বয়ান অনুষ্ঠিত হয়।

উদ্বোধনী ও সমাপনী বয়ান পেশ করেন চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, আর মাঝের তিনটি বয়ান পেশ করেন বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। এ ছাড়া দেশের শীর্ষস্থানীয় দরবারগুলোর পীর এবং শীর্ষস্থানীয় ওলামারা মাহফিলে বয়ান করবেন। তিন দিনব্যাপী মাহফিলের প্রথম দিন বুধবার সকালে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের উদ্যোগে প্রতিনিধি সম্মেলন হয়।

দ্বিতীয় দিন সারা দেশ থেকে আগত ওলামায়ে কিরামদের নিয়ে ওলামা সম্মেলন এবং শেষ দিন সকালে সারা দেশ থেকে আগত ছাত্র-জনতাকে নিয়ে ছাত্র গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মাহফিলে আগত যুবক, শ্রমিকদের নিয়ে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ এবং ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজন করবে বিশেষ মতবিনিময় সভা।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network