আপডেট: ডিসেম্বর ১, ২০২৫
বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি:: বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারনে সারাদেশব্যাপী মসজিদে মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। কিন্তু বরিশালের বাকেরগঞ্জে ঘটেছে ব্যতিক্রমী ঘটনা। যে ঘটনার কেন্দ্র করে এখন সমালোচনার ঝড় চলছে। দলের নির্দেশনা তোয়াক্কা না করে নিজ স্বার্থে সিদ্ধহস্ত উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কমিটির সদস্য আবদুস সালাম মৃধা। তিনি দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের বিপরীতে নিজ সংবর্ধনার নামে আমোদ প্রমোদে মেতে উঠছে। এনিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। তাদের এ ক্ষোভ যে কোন সময় বিক্ষোভে রুপ নিতে পারে।
উল্লেখ্য ২৭ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আশংকাজনক অবনতি ঘটে। এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার ২৮ নভেম্বর বিএনপি দেশব্যাপী মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। কিন্তু বহিস্কৃত নেতা আবদুস সালাম মৃধার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার হওয়ায় পর পর তিনি পুরানো উম্মাদনায় মেতে ওঠেন। দলীয় নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে ২৮ নভেম্বর সৈয়দ আফসার আলী ডিগ্রী কলেজ চত্বরে নিজ সংবর্ধনার নামে আমোদ প্রমোদে মেতে ওঠেন।
দলের নীতি আদর্শ বিরোধী তার এমন অস্বাভাবিক কর্মকান্ডে সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই এখন কানাঘুষা করতে শোনা যায় দলের বদনাম করে পুরান ঘাতক নতুন রুপে ফিরে এসেছে।
তার নিজ উদ্যোগে সংবর্ধনার আয়োজন করলেও সামনে রাখা হয় আবদুস সালাম মৃধার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহেল সিকদারকে। এর আগে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে সোহেল সিকদারের সাথে একত্রে মিলে দলবিরোধী অনেক অপকর্ম হাসিল করেছেন তিনি। সাধারণ সম্পাদকের মত দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে সোহেল সিকদারের এরকম ভূমিকায় হতাশ নেতাকর্মীরা।
নিয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সোহেল ফরাজী এ বিষয় সাংবাদিকদের জানান, তিনি পেশাগত কারনে জীবিকার তাগিদে দেশের বাইরে রয়েছেন। বিএনপি নেতা আবদুস সালাম মৃধাকে সংবর্ধনা দেয়ার খবর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার সময় কোন নেতাকে সংবর্ধনা দেয়া বা নেয়া সঠিক হয়নি। কেউ যদি ব্যক্তি স্বার্থে সংবর্ধনা দেয় কিংবা নেয় সেটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। তবে এ সংবর্ধনার সাথে নিয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপি’র কোন সম্পৃক্ততা নেই বলেও তিনি জানান।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সালাম মৃধা জানান, দীর্ঘদিন পর দল থেকে তার প্রাথমিক সদস্যপদ বহাল করায় নেতাকর্মীরা তাকে ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এছাড়া ওইদিন বেগম জিয়ান নামে দোয়া-মোনাজাত করেন বলেও জানান।
নিয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহেল সিকদার জানান, শুক্রবার খালেদা জিয়ার নামে দোয়া মিলাদ পড়ানো হয়। ওইসময় স্থানীয় নেতাকর্মীরা সালাম মৃধাকে ফুলের তোড়া দেয়। বেগম জিয়ার মৃত্যুশয্যায় বিএনপি নেতাকে সংবর্ধনা দেয়া সমীচিন কিনা জানতে চাইলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেয়।
এ বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান মিজান বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। ঠিক এ সময় কোন নেতার সংবর্ধনা আয়োজন দুঃখজনক। নিয়ামতিতে আব্দুস সালাম মৃধার সংবর্ধনা নেয়ার বিষয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক আবুল হোসেন খান অবগত রয়েছেন। দলীয় ফোরামে আলোচনা করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

