আপডেট: মে ২৪, ২০২০
নেত্রকোনার বারহাট্টা থানা পুলিশ গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বারহাট্টার এক ব্যবসায়ীর ২০০ বস্তা ধান নিয়ে পালিয়ে যাওয়া ট্রাকসহ ধান বিক্রির ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার ও ট্রাকের সংশ্লিষ্ট চালকসহ চোর গ্যাঙের তিন সদস্যকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হচ্ছেন- উদ্ধারকৃত ট্রাকের চালক গাজীপুর জেলার শ্রীপুর এলাকার রফিক (৩৭) ও সহযোগী চালক শামীম (৩৫) এবং তার অপকর্মের সহযোগী নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা এলাকার চালক রতন (৩৪)। আটককৃতরা ১৬৪ ধারার বিধানমতে আদালতের কাছে স্বীকারুক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
জানা য়ায়, বারহাট্টা উপজেলা সদরের জিরোপয়েন্ট এলাকার ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম গত ১৭ মে ভাড়াকৃত ট্রাকে টাঙ্গাইলের ক্রেতার কাছে ২০০ বস্তা ধান পাঠায়। ট্রাকটি বারহাট্টা ত্যাগের পর থেকেই শফিকুল চালক রফিকের দেওয়া মোবাইলে যোগাযোগ অব্যাহত রাখে।
এই ধান ১৮ মে’র মধ্যে ক্রেতার মোকামে পৌঁছানোর কথা। এই দিন শফিকুল মোবাইলে কল দিলে চালক রফিক জানায়, ট্রাকটির ইঞ্জিন নষ্ট ও তারা ময়মনসিংহের মোক্তাগাছায় আছে। কিন্তু ১৯ মে’র মধ্যেও ক্রেতা ধানের প্রাপ্তি স্বীকার না করায় শফিকুলের সন্দেহ হয়। চালক রফিকের দেওয়া নম্বরে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এই অবস্থায় শফিকুল ১৯ মে বারহাট্টা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
বারহাট্টা থানার পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মিজানুর রহমান বলেন, শফিকুলের জিডি’র পর পরই বিষয়টি এসপি স্যারকে জানানো হয়। এসপি আকবর আলী মুনশী স্যারের নির্দেশনামতে অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এস এম আশরাফুল আলম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বারহাট্টা সার্কেল) মো. সাইদুর রহমান স্যারের সক্রিয় অংশ গ্রহণে অভিযানের পরিকল্পনা করি। অনুসন্ধানে জানা যায় যে, চালক রতন ঠাকুরাকোনায় অবস্থান করছে। চালক রতনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে সে অপকর্মের কথা স্বীকার করে। রতন আরো জানায়, ২০০ বস্তা ধানের মধ্যে কিছু বস্তা বারহাট্টার নৈহাটীবাজার, কিছু বস্তা ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুরের শ্যামগঞ্জ বাজার এবং অবশিষ্ট বস্তা ঠাকুরগাঁওয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রয় করা হয়েছে। রফিক ও শামীমকে গ্রেপ্তার ও ট্রাক উদ্ধারের জন্য বারহাট্টা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা ও অতিরিক্ত পরিদর্শক ফরিদ আহম্মেদ অভিযান পরিচালনা করেন।”
পরিদর্শক সোহেল রানা বলেন, “অভিযান পরিচালনায় আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হয়। আমরা দুদিন ধরে গাজীপুর অবস্থান ও খুবই ধৈর্যের সঙ্গে বার বার চেষ্টা করে চালক রফিকের দেওয়া মোবাইল ট্র্যাকিং ও মালিককে শনাক্ত করতে সক্ষম হই।
ট্র্যাকিংকালে মোবাইলের অবস্থান গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকায় বলে জানা যায়। শ্রীপুর গিয়ে শনাক্ত মোবাইলের মালিককে খোঁজে বের করে জিজ্ঞাসাবাদ করি। ওই ব্যক্তি জানায় যে, তার মোবাইলটি এক সপ্তাহ আগে চুরি গেছে। তার দেওয়া তথ্য, স্থানীয় জনসাধারণ ও পুলিশের সহায়তায় অবশেষে আমরা শ্রীপুর এলাকা থেকে চালক রফিক ও শামীমকে আটক এবং ট্রাকসহ ধান বিক্রির ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হই।
এ ব্যাপারে ২২ মে রাতে বারহাট্টা থানায় মামলা দায়ের এবং ২৩ মে আসামিদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ট্রাকটি আটক আছে।গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশকে জানায়, তারা ঘটনার এক সপ্তাহ আগে এই পরিকল্পনা করে। যাতে ধরা না পড়ে, এ জন্য অন্যের মোবাইল চুরি ও ট্রাকে দুটি নম্বর প্লেট ব্যবহার করে। মালিক সঙ্গে থাকায় একবার তারা ব্যর্থ হয়।