আপডেট: নভেম্বর ৯, ২০২৪
গাজীপুর প্রতিনিধি :: গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। এরপর থেকেই বন্ধ আছে পার্কটি। বিনা নোটিশে পার্কটি বন্ধ রাখায় প্রতিদিন শত মানুষও মূল ফটক থেকে ফিরে যাচ্ছেন। মৌসুমের শুরুতে চিত্তবিনোদনের অন্যতম ভরসা হয়ে ওঠা রাজধানীর কাছের গাজীপুরের সাফারি পার্ক বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষজন যেমন হতাশ হচ্ছেন, তেমনি রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।আসন্ন পর্যটন মৌসুম বিবেচনায় দ্রুত পার্কটি খুলে দেওয়ার দাবি সাধারণ মানুষের।এদিকে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে শীঘ্রই পার্কটি খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে তারা।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন গত ৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে একদল দুর্বৃত্ত হামলা করে। এ সময় মূল ফটক ভেঙে প্রবেশ করে অফিসকক্ষ, পর্যটক বহনকারী যানবাহনসহ বিভিন্ন ইভেন্টেও ভাঙচুর করা হয়। সে সময় পার্কের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। এ ঘটনায় ময়ূরসহ বেশ কিছু প্রাণীও খোয়া যায়।
পার্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের সেই ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় আড়াই কোটি টাকা। পরে পরিস্থিতি বিবেচনার কারণে পার্কটি বন্ধ করা হয়।এদিকে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় গত ৩ মাসে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার।
শনিবার (০৯ নভেম্বর) দুপুরে পার্কে গিয়ে দেখা যায়, মূল ফটকের সামনে বিচ্ছিন্নভাবে বসে আছেন ভাসমান দোকানিরা। রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়িতে করে পার্কের উদ্দেশ্যে আসছেন দর্শনার্থীরা। বন্ধ থাকায় তারা হতাশ হয়েই ফিরে যাচ্ছেন।
বন্ধের কোনো নোটিশ না জেনে পার্কে বিনোদনের জন্য রাজধানীর ভাটারা থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এসেছেন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা সাগর আহমেদ। তিনি বলেন, সাফারি পার্ক বন্ধ এমন কোনো তথ্য আমরা জানি না। আজ বন্ধের দিন থাকায় সকালে রওনা হয়ে এখানে আসি। সড়কের যানজট ঠেলে পার্কে গেটে এসে জানতে পারলাম এটি বন্ধ। এখন অনেকটা হতাশ হয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে।সাভার থেকে পরিবার নিয়ে পার্কে ঘুরতে এসেছিলেন আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, কোনো নোটিশ নেই অথচ পার্কটির মূল ফটক বন্ধ। দর্শনার্থীদের জন্য নোটিশ দেওয়া দরকার ছিল। এটাতো কর্তৃপক্ষের এক প্রকার দায়িত্বজ্ঞানহীনতা।
পার্কের মূল ফটকের সামনে দর্শনার্থী না থাকলেও পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন মো. কিয়াম। তিনি বলেন, অনেকেই না জেনে পার্কটিতে ঘুরতে এসেও মূল ফটক বন্ধ থাকায় হতাশ হয়ে ফিরে যান। প্রতিদিন শত মানুষও আসে, তাদের কাছেই মূলত এসব বিক্রি করি।
সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, পার্কটিতে ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে। পরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। যেহেতু এখন পর্যটক মৌসুম চলে এসেছে তাই আমরা দ্রুত পর্যটকদের উপযোগী করতে কাজ করছি।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমীন আক্তার বলেন, পার্কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এসব ঠিকঠাক করতে কিছু সময় লেগেছে। তবে আমাদের আশা শীঘ্রই পার্কটি খুলে দেওয়া হবে।