২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

ভোলা শহরে প্রকাশ্যে চলছে জাটকা নিধন-বিক্রি, নীরব মৎস্য বিভাগ

আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২২

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

ভোলা প্রতিনিধি:: ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ১ নভেম্বর থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত আট মাস জাটকা আহরণ, পরিবহন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও বাজারজাতকরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাকালীন ১০ ইঞ্চি বা ২৫ সেন্টিমিটারের নিচে ইলিশ শিকার করা বেআইনি। কিন্তু এ আইন উপেক্ষা করেই ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে জাটকা নিধনের মহা উৎসব চলছে।

নদী থেকে অবৈধ কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ জাল দিয়ে জাটকা ধরে ঘাটে এনে ডাকে তুলে বিক্রি করছেন জেলেরা। সেই মাছ বেপারিরা কিনে এনে বিভিন্ন ছোট-বড় বাজারে বিক্রি করছেন প্রকাশ্যেই। এসব দেখেও প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ নীরব ভূমিকা পালন করছে। এতে সরকারের ইলিশের উৎপাদনের উদ্যোগ ভেস্তে যাচ্ছে।

ভোলার বিভিন্ন মাছঘাট ঘুরে দেখা গেছে, জেলার ছোট-বড় প্রতিটি ঘাটেই ইলিশ ও অন্যান্য মাছের মতো জাটকাও ডাকে তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। সাইজ অনুযায়ী প্রতি হালি জাটকা ৭০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত ডাকে বিক্রি করছেন জেলেরা।

ভোলার ইলিশা, কাঠিরমাথা, তুলাতুলিসহ কয়েকটি ঘাটের জেলেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মা-ইলিশ রক্ষা অভিযান প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে রকম কঠোরভাবে পালন করা হয়, জাটকা অভিযানে সে রকম কঠোরতা নেই। তাই জেলেরা নির্বিঘ্নে জাটকা নিধন করছেন। জাটকা ধরা নিষিদ্ধ হলেও প্রশাসনের ঢিলেঢালা ভাবের কারণেই যে যার মতো জাটকা ধরছেন এবং বিক্রি করছেন।

জেলেরা আরো জানান, জাটকা অভিযানের আড়াই মাস অতিবাহিত হলেও মৎস্য অফিস বা প্রশাসনের কোনো লোককে তাঁরা নদীতে বা ঘাটে অভিযান চালাতে দেখেননি।

ভোলা শহরের বাংলাস্কুল মোড়ে মাছ বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ী মো. মনির জানান, ঘাট থেকে ছোট সাইজের জাটকা ৭০-৮০ টাকা ও মিডিয়াম সাইজের জাটকা ৩ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা করে কিনে আনেন। বাজারে বিক্রি করতে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয় কি-না জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, বাজারে জাটকা বিক্রিতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। শুধু বাজারের মহলদার মাঝেমধ্যে আনতে নিষেধ করে। তার পরও নদী থেকে জেলেরা ধরেন বিধায় তাঁরা কিনে আনেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভোলার চরফ্যাশনের কয়েকজন আড়তদার জানান, জাটকা ধরায় সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মৎস্য বিভাগ জাটকা সংরক্ষণে নদীতে অভিযান দেয় না। তাই জেলেরা নদী থেকে জাটকা ধরে আড়তে নিয়ে আসে। পরে আড়তদাররা সেগুলো কিনতে বাধ্য হয়। আবার সেই জাটকা বিক্রি করতে মোকামে পাঠানোর সময় কোস্ট গার্ডের ঝামেলায় পড়তে হয়। আমরা টাকা দিয়ে মাছ কিনে একদিকে লোকসান দিতে হচ্ছে অন্যদিকে হয়রানিরও শিকার হতে হচ্ছে। এগুলো না করে নদীতে ভালোভাবে অভিযান দিলেই জাটকা ধরা বন্ধ হবে। অন্যথায় সরকারের এ উদ্যোগ কোনো কাজে আসবে না।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘জাটকা সংরক্ষণে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। এর মধ্যে কয়েকটি জায়গা থেকে বিপুল পরিমাণ জাটকা জব্দ করা হয়েছে। সেই সাথে নদী থেকে অবৈধ জাল অপসারণের জন্য বিশেষ কম্বিং অপারেশনও চলছে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তার পরও জেলা প্রশাসকের সাথে কথা হয়েছে, শিগগিরই ম্যাজিস্ট্রেটসহ ভোলার প্রতিটি জায়গায় জাটকা সংরক্ষণ অভিযান চালানো হবে।’

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network