আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক:: বরিশালে কাঠুরে আনিচুর রহমান হত্যা মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, বরিশাল সদর উপজেলার চরআবদানী এলাকার বাসিন্দা আলভী (২৩) ও তার বাবা শরীফুল ইসলাম সুমন (৪২) ও মা ঝুমুর বেগম (৩৭)।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে বরিশাল মেট্রোপলিটনের কাউনিয়া থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপ-কমিশনার (উত্তর) রুনা লায়লা।
তিনি বলেন, ৩০ নভেম্বর রাতে আলভী তার বাবা-মায়ের সহযোগিতায় একই এলাকার বাসিন্দা আনিচুর রহমানের (৪১) পেটে ছুরিকাঘাত করেন। এতে আনিচুর গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনিচুরের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ছনিয়া বেগম বাদী হয়ে ৫ নভেম্বর একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনায় ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে একটি অভিযানিক দল গঠন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হরষিৎ মণ্ডলের নেতৃত্বে একটি দল তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ১৮ নভেম্বর ঢাকায় অভিযান চালিয়ে এ মামলার দুই নম্বর আসামি শরীফুলকে গ্রেপ্তার করে।
এছাড়া ভারতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে ১৯ নভেম্বর নওগাঁ থেকে শরীফুলের ছেলে ও মামলার প্রধান আসামি আলভী এবং মামলার তিন নম্বর আসামি শরীফুলের স্ত্রী ঝুমুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সবাই প্রাথমিকভাবে হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন এবং প্রথমে গ্রেপ্তার হওয়া শরীফুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
এদিকে নিহতের বোন রেখা জানিয়েছেন, আলভীর সাথে অন্য একটি ছেলের বাগ-বিতণ্ডা হয়, যে ঘটনায় আলভী ওই ছেলের ওপর হামলা চালালে তারা ধাওয়া দেয়। আর ধাওয়া দেওয়ার পথে আমার ভাই তাদের দেখে ফেললে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন গ্রেপ্তাররা।
তিনি বলেন, ভাইকে হত্যার ঘটনায় মামলা করায় প্রতিনিয়ত গ্রেপ্তারদের স্বজনরা বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিচ্ছেন, এমনকি চলার পথেও হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। হামলাকারীদের নামে মাদক বিক্রিসহ বিভিন্ন অবৈধ কাজে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাই সব হুমকিদাতাদের আমরা চিনতেও পারছি না।
আর স্থানীয়রাও বলছেন, আলভীর পরিবার মাদক বিক্রির সাথে জড়িত থাকায় এলাকার সবাই ভয় পায়।
এসআই বলেন, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে এই হত্যা মামলা ছাড়াও একাধিক মামলা রয়েছে। তবে সর্বশেষ হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূরে আলম জানান, শুধু মামলার এজাহারনামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার নয়, ঘটনার সময় ব্যবহৃত ছুরিসহ বেশ কিছু আলামতও উদ্ধার করা হয়েছে।কেউ জড়িত আছে কিনা সেসব বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।