আপডেট: জানুয়ারি ৫, ২০২৫
ছবি: আপডেট নিউজ বিডি টোয়েন্টিফোর
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা হল্ট স্টেশনে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেসের যাত্রবিরতির দাবি বারবারই আশ্বাসের মধ্য দিয়ে শেষ হয়ে যায়। ট্রেন দুটির যাত্রাবিরতির দাবিতে এর আগেও একাধিকবার করা হয়েছে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ। ঘটেছে রেলপথ অবরোধ করার মতো ঘটনা। কিন্তু কোনকিছুতেই মন গলেনি রেল কর্তৃপক্ষের।
কিন্তু দর্শনাসহ আশপাশের এলাকাবাসীও নাছোড়বান্দা। ৭২৫ আপ সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও ৭৬৪ ডাউন চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের দর্শনা হল্ট স্টেশনে কমপক্ষে ৩ মিনিট যাত্রাবিরতির দাবিতে রবিবার (৫ই জানুয়ারি ২০২৫) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও দর্শনাবাসীর আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে রবিবারের আন্দোলন ছিল অন্যবারের তুলনায় ভিন্ন। এদিন দর্শনা হল্ট স্টেশনে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসকে দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত আটকে রাখা হয়। রেলওয়ের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক শেষে সেনাবাহিনীর আশ্বাসে ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর রেলপথ ছেড়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।
ট্রেন দুটির যাত্রাবিরতিসহ ৬ দফা দাবিতে ২০২৩ সালের ১লা মার্চ ‘দর্শনার জন্য আমরা’ সংগঠনের আয়োজনে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। খবর পেয়ে সেই সময় দর্শনা হল্ট স্টেশনে উপস্থিত হন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোকসানা মিতা। ওই সময় তিনি অবরোধকারীদের সাথে কথা বলেন এবং অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানান। ইউএনওর অনুরোধে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে স্মারকলিপি দেওয়া হয় জেলা প্রশাসক বরাবর। কিছুদিন আগেও দর্শনার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ট্রেন দুটির যাত্রাবিরতির দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দাবি কোনকিছুতেই বাস্তবায়ন করছে না রেল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশন থেকে দর্শনা-ঢাকার মধ্যে তিন জোড়া নতুন ট্রেন চালু করার কথা থাকলে তাও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না।
এদিকে দর্শনা হল্ট স্টেশনে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখায় বিভিন্ন স্টেশনে অন্যান্য ট্রেনকে বসিয়ে রাখা হয়। গতকাল শনিবারও যাত্রাবিরতির দাবিতে আলমডাঙ্গা স্টেশনে ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেসকে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ঢাকায় যাওয়ার সময় এবং চিত্রা এক্সপ্রেস খুলনা যাওয়ার সময় দর্শনা হল্ট স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে না। যার কারণে দর্শনা ও আশপাশের এলাকার মানুষজন গভীর রাতে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে যেয়ে তারপর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে ঢাকায় যেতে হয়। একইভাবে ঢাকা থেকে চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠে দর্শনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে গভীর রাতে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে নেমে তারপর বাড়ি ফিরতে হয়। যার ফলে খরচ বেড়ে যায় অনেক, গভীর রাতে যানবাহন পেতেও পোহাতে হয় ভোগান্তি। অনেকে আবার ঝামেলা এড়াতে স্টেশনেই অপেক্ষা করেন সকাল পর্যন্ত। যে কারণে দর্শনা হল্ট স্টেশনে ট্রেন দুটির যাত্রাবিরতির দাবি করা হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকেই।
আমিনুর রহমান নয়ন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার।