২৩শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার

গৌরনদীতে চিকিৎসা অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

আপডেট: নভেম্বর ২৩, ২০২৫

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক।।সিজার অপারেশনের পর চিকিৎসক ও বেসরকারি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায় সাথী আক্তার পরি (২২) নামের এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলায় দুইজন চিকিৎসক ও ক্লিনিক পরিচালকসহ চারজনের নামোল্লেখ ও আরো অজ্ঞাতনামা ৭/৮জনকে আসামি করা হয়েছে।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরিশালের গৌরনদী মডেল থানার এসআই মো. অলিউল্লাহ জানিয়েছেন-মৃত সাথী আক্তার পরির স্বামী উজিরপুর উপজেলার ভরসাকাঠী গ্রামের ইমন আকন বাদি হয়ে ভুল চিকিৎসা ও চরম অবহেলায় তার স্ত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলায় সিজার করা চিকিৎসক ডা. সমিরন হালদার, ক্লিনিকের চিকিৎসক ডা. আকাশ, বাটাজোর এলাকার বেসরকারি মদিনা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক এনামুল হক মনির ওরফে ডালিম, পার্টনার সাব্বির হোসেনের নামোল্লেখসহ আরো ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এসআই মো. অলিউল্লাহ আরও জানিয়েছেন-রবিবার সকালে মৃত সাথী আক্তার পরির মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।

মৃত সাথী আক্তার পরির শ্বশুর নজরুল আকন জানিয়েছেন, শনিবার (২২ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে তার পুত্রবধূর প্রসব বেদনা শুরু হলে বাটাজোরের মদিনা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। প্রথমে ক্লিনিকের চিকিৎসক নরমাল ডেলিভারির কথা বলে পাঁচ হাজার টাকার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান। পরবর্তীতে সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন।

একপর্যায়ে তারা সিজারে আপত্তি জানালেও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সিজার করাতে তাদের বাধ্য করেন। অভিযোগ করে নজরুল আকন বলেন, ওইদিন বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সিজারের মাধ্যমে ছেলে বাচ্চার জন্ম দেয় পরি।

সিজারের পরপরই সিজারকারী চিকিৎসক ডা. সমিরন হালদার ক্লিনিক ত্যাগ করে চলে যায়। পরবর্তীতে আধাঘন্টা পর পরিকে বেডে দেয়া হলেও তার শরীর সম্পূর্ন সাদা হয়ে যায় এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। শাসকষ্টের বিষয়টি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা জানায় ক্লিনিকে কোন অক্সিজেন নেই, বাহির থেকে আনতে হবে। পরে একজন স্টাফ অক্সিজেন আনতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি।

নজরুল আকন আরও বলেন, পরির শারিরিক অবস্থা আরও খারাপ হলে আমরা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করি। এসময় ক্লিনিকের চিকিৎসকেরা এসে পরীক্ষা করে আমাদের কোন কিছু না জানিয়ে ক্লিনিক থেকে বের হয়ে যায়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্লিনিকের সব স্টাফরা কৌশলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে পাশের একটি ক্লিনিক থেকে চিকিৎসক এনে পরীক্ষা করিয়ে জানতে পারি পরি মারা গেছে।

বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পরলে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালিয়ে ওই ক্লিনিকের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। খবরপেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতের মরদেহ উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দেওয়া তাদের কোন ধরনের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এমনকি সিজারকারী ডা. সমিরন হালদারের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।

গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহতা জারাব সালেহীন বলেন, পুরো বিষয়টির খোঁজ নিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের গাফলতি পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network