২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

গ্রামে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, হাসপাতালে রোগীর স্রোত

আপডেট: এপ্রিল ১৭, ২০২১

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

ঝালকাঠি প্রতিনিধি:: ঝালকাঠি জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি জেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন এক হাজার মানুষ। প্রতিদিন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের শত শত রোগী। হাসপাতালে বেডে যত রোগী তার চেয়ে বেশি চিকিৎসা নিচ্ছেন ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দায় বিছানা পেতে। এদের অনেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলেও তাদের সংস্পর্শে আসা বা সেবা করার জন্য আসা অনেকেই নতুন করে আক্রান্ত হয়ে ফের হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালে ডায়রিয়ার রোগীর জন্য বেড রয়েছে মাত্র ১৩টি। ফলে বাধ্য হয়ে বাকি রোগীরা হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। জেলা সদর হাসপাতালসহ জেলার নলছিটি, রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকাল থেকে শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। কঠোর লকডাউনের কারণে যানবাহনের অভাবে গ্রাম থেকে রোগীরা হাসপাতালে আসতে নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন।

চিকিৎসকরা জানান, ঋতু বদলের কারণে প্রকৃতিতে এখন প্রচণ্ড গরম। এ কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে পানিশূন্যতা ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এরমধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার মানুষ। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন এক হাজারেরও বেশি রোগী। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক।ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. আমির হোসেন বলেন, গ্রামের লোকজন ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আবহাওয়া পরিবর্তন কারণ হতে পারে। গরমে খাওয়া দাওয়া হিসেব না করে খেলে পেটে পীড়া বেড়ে যায়। ডায়রিয়ার কারণে অত্যাধিক পেট ব্যথা, পাতলা পায়খানা ও বমি হয়। এমন উপসর্গ দেখা দিলে খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে বেশি করে। ডাবের পানি খাওয়ানো যেতে পারে। রোগীর অবস্থা ভালো মনে না হলে নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে।

ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী জানিয়েছেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত আইভি স্যালাইন ও খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি অন্যান্য ওষুধ রয়েছে। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জেনেছেন, বর্তমানে তরমুজ-বাঙ্গি ও অপরিপক্ক আম খেয়ে অসুস্থ হওয়ার সংখ্যাই বেশি। আক্রান্ত রোগীকে বিশুদ্ধ পানি পান ও নিরাপদ খাবার খাওয়ার পাশাপাশি শিশু ও বয়স্কদের নিরাপদে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

হাসপাতালে আগত ডায়রিয়া রোগীদের মধ্যে একটি অংশ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকতে পারে বলেও ধারণা করছেন সিভিল সার্জন।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ঝালকাঠিতে আরও ৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এই নিয়ে এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১০৮৭ জন। জেলায়  মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। সুস্থ হয়েছে ৮৫৬ জন। বর্তমানে ৩ জন হাসপাতালে ও ২০৩ জন হোম আইসোলিয়েশনে রয়েছেন।

এদিকে ঝালকাঠিতে করোনা ভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শহরে স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী দূরত্ব বজায় না রাখা, মাস্ক ব্যবহার না করা এবং লকডাউনের মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার দায়ে ৯টি মামলায় ৯ জনকে ৬ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা আক্তার ও সায়েম ইমরান এই দণ্ড প্রদান করেছেন।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network