আপডেট: এপ্রিল ১৯, ২০২১
ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক: মহামারী করোনাভাইরাস থেকে রক্ষায় সরকার ঘোষিত ১৮ দফা নির্দেশনা মেনে চলার কারণে বরগুনার আমতলী উপজেলায় বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ সকল সড়কে যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা বিভিন্ন যানবাহনের ৫/৬ হাজার চালক ও শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। এতে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দ্রুত সরকারিভাবে এদের সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, মহামারী করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে সরকার গত ১৪ এপ্রিল থেকে সারা দেশে সাধারণ ছুটি ও সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করে মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। সরকার ঘোষিত লকডাউন ষষ্ঠদিন চললেও এ লকডাউন মানতে গিয়ে উপজেলার অভ্যন্তরীণ সকল রুটে চলাচলরত সকল প্রকার যানবাহন যেমন মাহেন্দ্র, ব্যাটারিচালিত অটোগাড়ি, টেম্পু, মিশুক, বেবি ট্যাক্সি, ট্যাক্সিকার, বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস বন্ধ রয়েছে। এতে এ পেশায় কর্মরত প্রায় ৫ হাজার চালক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। আয় রোজগার বন্ধ থাকায় তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
আজ সোমবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিচ্ছিন্নভাবে কিছু অটোরিকশা, ইজিবাইক ও মিশুক স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ৫/৬ জন যাত্রী বহন করে চলাচল করছে। এতে অন্যান্য শ্রমিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। কিন্তু সড়কে বড় ধরনের কোনো যানবাহন চলাচল করছে দেখা যায়নি।
থ্রি-হুইলার মাহেন্দ্র মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুর রহমান জামাল মুঠোফোনে বলেন, লকডাউনে কোনো কাজ না থাকায় বাড়িতে বসে অলস সময় কাটাচ্ছে চালক ও শ্রমিকরা। কিন্তু পেটতো অলস না, সেতো যথা সময়ে খাবার চায়। এভাবে লকডাউন চললে কি করবে চালক শ্রমিকরা তা ভেবে পাচ্ছি না।
আমতলী সরকারি কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক (অব.) মো. আবুল হোসেন বিশ্বাস মুঠোফোনে বলেন, লকডাউনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মহীন মানুষের কাজ করার জন্য নির্ধারিত সময় দেওয়া প্রয়োজন। যাতে তারা উপার্জন করে পরিবার-পরিজন নিয়ে দু-মুঠো খেতে পড়ে বাঁচতে পারে। তা নাহলে কর্মহীন মানুষগুলোকে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করতে হবে।
বরগুনা জেলা যান্ত্রিকযান ত্রি-হুইলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও উপজেলা শ্রমিকলীগের আহ্বায়ক মো. জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা বলেন, সরকারের ১৮ দফা স্বাস্থ্যবিধি ও সর্বাত্মক লকডাউনের কারণে গত ১৪ এপ্রিল থেকে যান চলাচল বন্ধ থাকায় উপজেলার ৫/৬ হাজার চালক ও শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছেন। এ সকল চালক ও শ্রমিকের পরিবারের মানুষ অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছেন। বেকার চালক ও শ্রমিকদের সহযোগিতার জন্য প্রশাসনের উচ্চ মহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, উপজেলার শ্রমজীবী ও অসহায় মানুষকে সহায়তার বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। এখনো বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দ পেলে তাদের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।