২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

নবাবের মূল্য ৯ লাখ

আপডেট: জুন ১৪, ২০২১

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও উচ্চতা ৫ ফুট ৩ ইঞ্চির বেশি হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান ক্রোস জাতের ষাঁড়টির দাম হাঁকা হয়েছে ৯ লাখ টাকা। ওজন ৭২০ কেজি বা ১৮ মণের গরুটি দেখতে লোকজন প্রতিদিন ভিড় করছেন।

ষাঁড়ের মালিক শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কোব্বাস মাদবরের কান্দি গ্রামের প্রবাসীর স্ত্রী হাবিবুন্নেছা। তিনি কোরবানির ঈদে ষাঁড়টি বিক্রি করবেন বলে জানা গেছে।

২০১৭ সালে ৫০ হাজার টাকায় একটি গাভি কিনে পালন শুরু করেন হাবিবুন্নেছার বাবা নুর মোহাম্মদ ঢালী। হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান ক্রোস জাতের ষাঁড়টির সিমেন ব্যবহার করে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ২০১৮ সালেই এই ষাঁড়ের জন্ম দেয়। জন্মের পর বাছুরটিকে দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। পরে নুর মোহাম্মদ ঢালীর কাছ থেকে বাছুরটি ৪৫ হাজার টাকায় কিনে আনেন তার মেয়ে হাবিবুন্নেছা। প্রয়োজন মতো খাবার ও পরিচর্যায় গরুর আকৃতি বাড়তে থাকে। দিনে দিনে গরুটির ওজন বেড়ে ৭২০ কেজিতে এসে দাঁড়ায়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ডিজিটাল স্কেলের মাধ্যমে গরুটির ওজন নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ বছর গরুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

হাবিবুন্নেছার স্বামী মালয়েশিয়া প্রবাসী ইসমাইল মাদবর জানান, ষাঁড়টির খাদ্য তালিকায় রয়েছে কাঁচা ঘাস, খড়, গমের ভুসি, চালের কুঁড়া, ভুট্টা, ডালের গুঁড়া ও ছোলা। সব মিলে দিনে ২০-২৫ কেজি খাবার খায় গরুটি। খাবার কম খেলেও দিনে দিনে তার খাবারের চাহিদার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে।

বর্তমানে শাকিল এগ্রো ফার্ম খামারটিতে ২০টি গরু রয়েছে। এরমধ্যে হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান ক্রোস জাতের পৌঁনে ২ লাখ টাকা দামের একটি ষাঁড় রয়েছে। কোরবানির ঈদে বিক্রি করার জন্য নবাবসহ দুটি গরু প্রস্তুত রয়েছে।

ইসমাইল মাদবর বলেন, এ ধরনের গরু লালন-পালন খুবই কষ্টকর। আমি মালেশিয়া থাকা অবস্থায় আমার স্ত্রী হাবিবুন্নেছা নবাবকে লালন-পালন করেছেন। আমি গত মে মাসের ১৯ তারিখে দেশে আসি। নবাব আমাদের পরিবারের একজন সদস্যের মতো করে আমার স্ত্রী তাকে পালন করেছেন। পরিবারের সবাই মিলে যত্ন নিয়ে বড় করেছেন। অনেক শ্রম ও অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। ৯ লাখ টাকায় গরুটি বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। তবে করোনার সংক্রমণের কারণে গরুটি তিনি কোনো হাটে না নিয়ে বাড়িতে খামারে রেখে অনলাইনে ছবি ও বিবরণ দিয়ে বিক্রির চেষ্টা করছেন।

জপসা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য নুরজামাল মাদবর বলেন, গৃহবধূ হাবিবুন্নেছা নবাবকে লালন-পালন করে বড় করেছেন। এই কোরবানিতে গরুটা বিক্রি করবে। গরুটার দাম ধরা হয়েছে ৯ লাখ টাকা। তবে এখনই পাইকাররা দাম বলছে ৪ লাখ টাকা। এতো বড় গরু আগে দেখিনি।

হাবিবুন্নেছা বলেন, আমার খুব আদরের নবাব। খুব যত্ন করে লালন-পালন করেছি। নবাব আমার পরিবারের সদস্যের মতো।

নড়িয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, খামারি হাবিবুন্নেছা কোরবানির পশুর হাটে বিক্রি করার জন্য আড়াই বছর শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে তার খামারে হলেস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান ক্রোস জাতের ১৮ মণ ওজনের একটি ষাঁড় লালন-পালন করেছেন। জানামতে শরীয়তপুরের কোথাও এতো বড় ষাঁড় নেই। তিনি সব সময় ষাঁড়টির পরিচর্যা ও খোঁজখবর নিয়ে থাকেন। হাবিবুন্নেছা একজন ভালো উদ্যোক্তা।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network