আপডেট: অক্টোবর ৮, ২০২৫
সার ক্রয়ের জন্য চাষিদের লম্বা লাইন
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় ড্রাগন, মাল্টা, পেয়ারা, কুলসহ বিভিন্ন ফল ও পেঁপে, কলা, আখ, ধানসহ শীতকালীন সবজি ও নানা শস্যের চাষ বৃদ্ধি পেলেও এসব ফসল চাষে যে পরিমাণ রাসায়নিক সারের প্রয়োজন সেই তুলনায় রাসায়নিক সার পাচ্ছেন না বলে চাষিরা অভিযোগ করেছেন।
কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জীবননগরে ইউরিয়া ও এমওপি সারের তেমন ঘাটতি না থাকলেও টিএসপি ও ডিএপি সারের তীব্র সংকট রয়েছে। চাষিরা ডিলারদের কাছে সার নিতে গিয়ে বারবার খালি হাতে ফিরে আসছেন। অনেক জায়গায় সার কিনতে কৃষকের লম্বা লাইন দিতে দেখা গেছে। অনেক চাষি অভিযোগ করে বলেন, ডিলারদের কাছে সার থাকে না, অথচ বেশি টাকা দিলে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে সার পাওয়া যায়।
শামিম হোসাইন নামের এক চাষি বলেন, বৃষ্টির পরে জমিগুলো চাষের উপযোগী হতে শুরু করেছে। এখন সার প্রয়োগের উপযুক্ত সময়। কিন্তু কোথাও সার পাওয়া যাচ্ছে না। ডিলারের কাছে যখনই যাই তারা বলে সার নেই। আমি পেয়ারা, আখ, শীতকালীন সবজি ও আমন ধানের চাষ করেছি। এখন আমার বেশ কয়েক বস্তা সার দরকার। কিন্তু সার পাচ্ছি না।
আরেক কৃষক আশকার আলী জানান, টিএসপি সার কেনার জন্য ভোর থেকে ডিলারের দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে মাত্র ২৫ কেজি সার পেয়েছি। আমার ৭ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ফসলের চাষ রয়েছে। এটুকু সারে কিছুই হবে না।
ডিলারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, টিএসপি সারের চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম। এই পরিমাণ সার দিয়ে কৃষকের এতো বেশি চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দের সার আসলেই সেটা ২/১ দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে কিছু অসাধু খুচরা ব্যবসায়ী সাধারণ মানুষদের কৃষক সাজিয়ে ডিলারের নিকট থেকে সার তুলে সেগুলো দোকানে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, জীবননগর উপজেলায় সারের তেমন সংকট নেই। জমিতে যতটুকু প্রয়োজন সেই তুলনায় ৫/৬ গুণ বেশি সার প্রয়োগ করে সার প্রয়োগ করায় সংকট তৈরি হচ্ছে। যে জমিতে ২০ কেজি টিএসপি সার প্রয়োগের দরকার সেখানে ১০০ কেজি টিএসপি সার প্রয়োগ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে জমির উর্বরতা শক্তি কম যাচ্ছে। এমন হতে থাকলে আগামী ২০/২৫ বছর পর এসব জমিগুলো প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারে। রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে কৃষি জমিতে বেশি বেশি করে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। তাহলে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, সারেরও সংকট তৈরি হবে না।
আমিনুর রহমান নয়ন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার।