১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

পিএসসির প্রশ্নফাঁসকারী আবেদ আলী এলাকায় একজন ভাল মানুষ

আপডেট: জুলাই ৯, ২০২৪

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

জাহিদ হাসান, মাদারীপুর প্রতিনিধি:
পিএসসির প্রশ্নফাঁস করে কোটি টাকার মালিক সৈয়দ আবেদ আলী তার এলাকার মানুষের কাছে একজন ভাল মানুষ। মানুষকে সাহায্য সহযোগীতাসহ দান খয়রাত করে এলাকায় এখন সে দানশীল ব্যক্তি। নিজেকে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। করেছেন পোষ্টারও। এলাকায় কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি করলেও গ্রামের সহজ সরল মানুষের মনে জাগেনি কোন প্রশ্ন।
পিএসসির প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সদস্য মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পূর্ব বোতলা গ্রামের দিনমজুর মৃত আব্দুর রহমান মীরের মেঝ ছেলে সৈয়দ আবেদ আলী। ৮ বছর বয়েসে আবেদ বাড়ি ছেড়ে ঢাকা যায়। সেখানে কি করেছে জানেনা এলাকাবাসী। হঠাৎ করে ২/৩ বছর আগে এলাকায় এসে দান করা শুরু করে আবেদ আলী। এলাকার মানুষের কাছে তিনি বলেছেন রিয়েল স্টেটসহ অনেক ব্যবসা আছে তার। তিনি একজন শিল্পপতি। এলাকায় মায়ের পৈতিক জমিতে একটি মসজিদ নির্মান করেন। মসজিদের পাশেই নির্মানাধীন প্রায় ৩ কোটি টাকার ডুপ্লেক্স বাড়ির কাজ শেষ পর্যায়। ভাঙ্গা ব্রিজ- ডাসার সড়কের সরকারি জমি দখল করে কোটি টাকার গরুর খামার করার কাজ শুরু করেন তিনি। পাশের গ্রাম পশ্চিম বোতলা মৌজায় আতা মীরের ছেলেদের কাজ থেকে ১ কোটি টাকা দিয়ে খামার করার জন্য ক্রয় করেন ৬০ শতাংশ জমি। এছাড়া পূর্ব কমলাপুর মৌজায় ছালাম মুন্সি ও আবু মুন্সির কাজ থেকে ১ কোটি টাকায় ক্রয় করেন ৬০ শতাংশ জমি। এ বছর ঈদুল আজহায় ৩টি গরু কোরবানী দেন তিনি। এলাকার মানুষকে দাওয়াত করে খাওয়ান এবং যাওয়ার সময় নগদ ৫০০ টাকা ও ১ কেজি কোরবানী দেয়া গরুর মাংস বিতরণ করেন। আবেদ আলী নিজেকে ডাসার উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা করে ছাপান পোস্টার। আবেদ আলীর প্রশ্নফাঁসের ঘটনা সামনে এলেও এখনও স্থানীয়রা ভাল মানুষ মনে করেন আবেদ আলীকে।
এলাকার ৩৬ বছরের যুবক মামুন মাতুব্বর বলেন, ১০/১৫ বছর আগেও দেখেছি আবেদ আলীদের পরিবার অনেক গরিব ছিল। আমি শুনেছি সে একটা চাকরি করত। অনেকে আবার সে চাকরিও দিয়েছে। চাকরির কথা বলে অনেকের কাছ থেকে বিপুল পরিমান টাকা আত্মসাৎ করেছে। দুদক এই বিষয়টা তদন্ত করলে অনেক কিছু বেড়িয়ে আসবে। আগে আমার বাবা দাদাদের সাথে সে কৃষি কাজ করছে। রাতারাতি এত বড়লোক কিভাবে হয়ে গেল বিষয়টা বুঝতে পারছিনা।
পূর্ব কমলাপুরের বাসিন্দা ইদ্রিস আলী জানান, আবেদ আলী খুবই ভাল মানুষ। আগে সচিবলায় চাকরি করত। বর্তমানে ব্যবসা করে। সামাজিক লোক। মানুষকে সাহায্য সহযোগীতা করে।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা বলেন, আবেদ আলী জীবনে অনেক কষ্ট করেছে। ঢাকার কাওরান বাজারে নাকি কাঁচা মালও টানছে। বর্তমানে তার এই সমাজে ভাল নাম ডাক। এলাকার মানুষদের যেকোন বিপদ আপদে সাহায্য করে। দুইদিন যাবৎ ফেসবুকে দেখতাছি আর মানুষের কাছে শুনছি সে নাকি পিএসসির প্রশ্নফাঁসে জড়িত এছাড়াও তার অনেক দুর্নীতি আছে। এলাকার মানুষকে সাহায্য করলেও নিজের ভাইদের কোন সাহায্য করে না আবেদ আলী। সে এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য ও উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য মানুষকে সাহায্য করছে।
স্থানীয়দের কাছে জানা যায়, আবেদ আলীর কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি হলেও ভাগ্য ফেরেনি ভাইদের। এমনকি ভাইদের কোন সাহায্য সহযোগীতা করেন না তিনি। বড় ভাই জাবেদ আলী এখনও দিন মজুরের কাজ করেন। এই কাজ করে ধার দেনা করে এক ছেলেকে ইটালী পাঠিয়েছেন তিনি। ছোট ভাই ছাবেদ আলী অটো চালায়। মোঝ ভাই আবেদ আলীর প্রশ্নফাঁসের ঘটনার পর সংবাদকর্মীদের এড়িয়ে চলছেন দুই ভাই ও তাদের পরিবার। তাদের বাড়িতে গিয়ে দুই ভাইসহ তাদের পরিবারের কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায় নাই।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network