আপডেট: সেপ্টেম্বর ২, ২০২১
অনলাইন ডেস্ক:: ফরিদপুরের সালথায় সড়ক ছাড়াই দুটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে দুটি সেতু কাজে আসছে না মানুষের। এর মধ্যে একটি সেতু নির্মাণে ৩০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করা হয়েছে। অন্য সেতুটির ফাইলপত্র গায়েব হয়ে গেছে। ফলে স্থানীয় এলজিইডি অফিস ব্যয়ের তথ্য জানাতে পারেনি। স্থানীয় সূত্র জানায়, সেতু দুটি দাঁড়িয়ে থাকলেও মানুষের উপকারে আসছে না। আগের মতই ভোগান্তি পোহাতে হয়। সেতু দুটিতে এখন পাটখড়ি শুকানো হয়। এ নিয়ে মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার শিহিপুর এলাকার সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে মাঠের মধ্যে। চারপাশে ফসলি জমি। চলতি বর্ষায় আর অতিবৃষ্টির পানিতে সেতুর চারপাশে পানি। আশেপাশের এলাকা বর্ষার পানিতে তলিয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সেতু দুটি নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে উপজেলার বেদাখালী খালের ওপর নির্মিত সেতুর ফলকে নির্মাণ ব্যয় লেখা রয়েছে ৩০ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। তবে শিহিপুর এলাকায় ফসলি মাঠের ওপর নির্মিত অন্য সেতুর নির্মাণ ব্যয় জানা যায়নি। কারণ সেখানে নেই নামফলক। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানাননি। তাদের ভাষ্য, শিহিপুর সেতুর ফাইলপত্র খুঁজে পাচ্ছেন না।
ভাওয়াল ইউনিয়নের বেদাখালিতে নির্মিত সেতুটি ইউসুফদিয়া, আত্মপুরা, বারখাদিয়া, তুগোলদিয়া, নওপাড়া এবং মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কুমারপট্টি ও মাঝারদিয়াসহ গ্রামবাসীর চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
অন্য সেতুটি শিহিপুরের ভাওয়াল ইউনিয়নের ফুলতলা, কাঁঠালবাড়িয়া, পুরুরা, মিরাকান্দা, কামদিয়া ও সালথা গ্রামবাসীর চলাচলের জন্য নির্মাণ করা হয়। দুই ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের মানুষের যাতায়াত ও কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ার প্রধান পথ এটি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নির্মাণের সময় আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল সেতুর কাজ শেষ হলেই সংযোগ সড়ক তৈরি করা হবে। কাঁচা রাস্তা পাকা হবে। কিন্তু কিছুই হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ সেখ, আবুল হোসেন, কেরামত আলী জানান, গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে রীতিমতো টালবাহানা করা হচ্ছে। শুকনো মৌসুমে বলে কিছু দিনের মধ্যে রাস্তার কাজ শুরু হবে, বর্ষা মৌসুমে বলে পানি শুকালে। বাস্তবে কোনও মৌসুমেই কাজ হয় না। এভাবে বছরের পর বছর আশ্বাস দিয়ে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে।
জনপ্রতিনিধি আর সংশ্লিষ্টেদের এমন কথা শুনতে শুনতে মানুষ অতিষ্ঠ। ভোগান্তির শেষ নেই। পাশাপাশি বাড়ছে ক্ষোভ। বর্ষা মৌসুমে ওই এলাকার প্রায় ১৫ গ্রামের হাজার হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা নৌকা।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) পরিতোষ বাড়ৈই বলেন, সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান প্রকল্প নিয়েছেন। ক্ষেতে পাট আর বর্ষার পানি থাকায় সড়কের কাজ শুরু হচ্ছে না। পানি শুকালে কাজ শুরু হবে।
জানতে চাইলে ভাওয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুকুজ্জামান ফকির বলেন, সেতু আছে ঠিকই। কিন্তু সড়কের জন্য মাটি কাটার ব্যবস্থা নেই। পানির মধ্যে কাজ করবো কীভাবে। শুকনো মৌসুমে মাটি কেটে সড়ক বানিয়ে দেবো। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া কিছুই করার নেই। সড়কের জন্য সাড়ে চার লাখ টাকার প্রকল্প পাস হয়ে আছে।