আপডেট: এপ্রিল ৩০, ২০২৪
ছবি: আপডেট নিউজ বিডি টোয়েন্টিফোর
অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে চুয়াডাঙ্গায় আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার (৩০শে এপ্রিল ২০২৪) বেলা ৩টার সময় চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস এই তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। এটিই চলতি মৌসুমে দেশের ২য় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এছাড়া এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে ৩য় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে ১৯৯৫ সালের মে মাসে চুয়াডাঙ্গা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০১৪ সালের মে মাসে এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সোমবার বেলা ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পুরো এপ্রিল মাসজুড়েই চুয়াডাঙ্গা জেলায় তাপপ্রবাহ চলমান রয়েছে। যা বাড়তে বাড়তে অতি তীব্র দাবদাহে রূপ নিয়েছে। রোদ-গরমে রাস্তাঘাট দিয়ে যাতায়াতের কোনো উপায় নাই। অটোভ্যান চালকেরা মাথায় গামছা ও ক্যাপ পরিধান করে যাত্রী বহন করছেন। রোদ থেকে বাঁচতে যাত্রীরাও চেষ্টা করছেন মাথার ওপর ছাতাসহ অন্য কিছু দিয়ে রাখতে। তবে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়াও মানুষজন ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। ছাদযুক্ত যানবাহন যেমন বাস, ইজিবাইকসহ অন্যান্য বাহনে যাতায়াত করতেও হচ্ছে চরম কষ্ট। জেলার বিভিন্ন স্থানে তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ পথচারী, যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের মাঝে খাবার স্যালাইন মিশ্রিত পানি ও লেবুর শরবত সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।
এদিকে তীব্র রোদ-গরম উপেক্ষা করে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কারণ মাঠজুড়ে রয়েছে পাকা ধান। অনেক কৃষক ধান কেটে ঘরে তুলতে পারলেও সবাই এখনও ধান ঘরে তুলতে পারেন নাই। এছাড়া অন্যান্য ফসলে সেচ দেওয়ার জন্য বাধ্য হয়ে রোদের মধ্যেই যেতে হচ্ছে মাঠে। তবে পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় সেচ দিতে গিয়েও পেতে হচ্ছে বেগ। এছাড়া পেটের তাগিদে অন্যান্য কাজ করতেও শ্রমিকরা ঘরের বাইরে যাচ্ছেন।
তাপপ্রবাহের কারণে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার আশঙ্কায় গতি কমিয়ে চলাচল করছে ট্রেন। যার কারণে বাড়ছে বিলম্ব। জেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের রেলস্টেশনগুলোর প্লাটফর্মের তুলনায় ছাউনি ছোট এবং ফ্যান না থাকায় রোদগরমে যাত্রীরা ঠিকমতো বিশ্রাম নিতে পারছেন না। গরম থেকে রেহাই পেতে ব্যবহার করছেন তালপাতার তৈরি হাতপাখা। ট্রেন যাত্রীরা মনে করছেন দেশের সকল রেলস্টেশন আধুনিকায়ন করা দরকার। তবে এখনও পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলায় বৃষ্টির বিষয়ে তেমন কোনো সুখবর নাই। আর একটানা প্রবল বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত এই তীব্র দাবদাহ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না। সামনের বছরগুলোতে দাবদাহ থেকে রক্ষা পেতে আগামী বর্ষা মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে গাছের চারা রোপণের কোনো বিকল্প নাই। পাশাপাশি বন্ধ করতে হবে অবিচারে বৃক্ষ নিধন।
আমিনুর রহমান নয়ন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার।