২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

চার কিলোমিটার সড়কে মারণফাঁদ! চরম দুর্ভোগে ২০ হাজার মানুষ

আপডেট: অক্টোবর ১৯, ২০২১

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

বেতাগী প্রতিনিধি::: বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নে চার  কিলোমিটার দীর্ঘ আঞ্চলিক সড়কে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে ২৩টি। এতে যানবাহনের চালক-যাত্রী ও পথচারীদের জন্য মারণফাঁদে পরিণত হয়েছে সড়কটি। চরম দুর্ভোগে পড়েছে দুই উপজেলার ২০ হাজার মানুষ।

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস থেকে জানা গেছে, বাসণ্ডা পুলের হাট থেকে হোসনাবাদ ইউনিয়নের জলিসা বাজারের রাসেল স্কয়ার পর্যন্ত ৪.৮৪ কিলোমিটার দীর্ঘ গ্রামীণ সড়ক। সড়কটি সংস্কারের জন্য ২০২০-২০২১ অর্থবছরের স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০২০ সালের জুন মাসে দুই প্যাকেজে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রের প্রাক্কলন অনুযায়ী জলিসা বাজারের রাসেল স্কয়ার থেকে ২.৩২ কিলোমিটার কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় বরগুনার ‘সোহেল ট্রেডার্স’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। বরাদ্দ হয় ৪৬ লাখ ৬০ হাজার ১৩১ টাকা। বাকি অংশ বাসণ্ডা পুলের হাট পর্যন্ত ২.৫৭ কিলোমিটার কাজ পায় বরগুনার ‘রাজ্জাক এন্টারপ্রাইজ’ নামের ঠিকাদারি  প্রতিষ্ঠান। অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় ৫৫ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৯ টাকা।

সোহেল ট্রেডার্সের কাজ গত ৫ জানুয়ারি প্রথম পর্যায় এবং রাজ্জাক এন্টারপ্রাইজের কাজ গত ২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ের শেষ হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এ সড়কে ছোট-বড় ২৩টি গর্ত। কোনো কোনো স্থানে সড়ক ভেঙে খাল সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের চলাচলের জন্য দেওয়া হয়েছে বাঁশ ও সুপারিগাছের সাঁকো। বর্তমানে কোনো যানবাহন চলাচল করছে না। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন জলিসা বাজারের শতাধিক ব্যবসায়ী। তাঁরা দ্বিগুণ অর্থ ব্যয় করে বিকল্প সড়ক ও নৌপথে পণ্য নিচ্ছেন।

জলিসা বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ী হিরন চৌকিদার বলেন, ‘এ সড়ক দিয়ে মালামাল আনা তো দূরের কথা, এখন মারণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।’ মোটরবাইকের চালক সুমন বলেন,  ‘এ সড়কের কাজ ভালো হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ অনুযায়ী কাজ করলে আট মাসের মধ্যে এতগুলো গর্ত হতে পারে না।’

পুলের হাটের একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, ‘সড়কের এ দশায় বর্তমানে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ঠিকাদার দরপত্রের প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ করলে যানবাহন চলাচল করতে পারত।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাজ্জাক এন্টারপ্রাইজের মো. জামাল হোসেন বলেন, ‘রাস্তা করলে গর্ত হতে পারে। তবে দরপত্রের শিডিউল অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি।’

হোসনাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান খান বলেন, ‘ওই সড়কের কাজ ভালো হয় নাই এটা নিশ্চিত। এখন পরিষদের এ ধরনের সড়ক সংস্কারের কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই। আমি ব্যক্তিগত অর্থায়নে কয়েকটি গর্ত সংস্কার করেছি এবং বাকি গর্ত শিগগিরই সংস্কার করা হবে।’

উপজেলা প্রকৌশলী শিপলু কর্মকার বলেন, এ সড়কটি গ্রামীণ উন্নয়নের ‘এ’ গ্রুপের সড়ক। সড়ক সংস্কার রোধে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, ‘ঠিকাদার যথাযথভাবে কাজ না করলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network