২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধে চলছে স্বেচ্ছাসংস্কার

আপডেট: মে ৩০, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

ঝালকাঠি প্রতিনিধি:: অবশেষে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার বিষখালী নদীর অরক্ষিত বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ স্বেচ্ছায় সংস্কার শুরু করেছে স্থানীয়রা। শনিবার সকালে দুর্যোগপূর্ণ আবহওয়ার মধ্যেই তিনশতাধিক মানুষ সংস্কার কাজ শুরু করেন। লঞ্চঘাটের নিরাপত্তা, ফসল, বসতঘর ও মাছের ঘের রক্ষা করতে স্থানীয়রা এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এর পূর্বে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রতিশ্রুতি দিলেও বিষখালী নদীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এতে বিক্ষুব্ধ হন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পানিবন্দী নদীতীরের মানুষ। এর আগে নদী তীরে দাঁড়িয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেন তাঁরা। এতে জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ অংশ নেয়।

স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বিষখালী নদীতীরের অরক্ষিত বেড়িবাঁধের ৫ কিলোমিটার ভেঙে ফসলি জমি ও বসত ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। ঝড়ের রাতে লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র আশ্রয় নিলেও পানির তোরে ভেসে গেছে বসতঘরে থাকা মালামাল। পানিতে তলিয়ে যায় আমুয়া, আউরা জয়খালী, চিংড়াখালী, মশাবুনিয়া, হেতালবুনিয়া, কাঁঠালিয়া সদর, বড় কাঁঠালিয়া, রঘুয়ার চর, আওরাবুনিয়া ও জাঙ্গালিয়া গ্রামের প্রায় দুই শ ঘরবাড়ি, তিনটি বাজারসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মসজিদ ও শত শত একর ফসলি জমি। বর্তমানে কাঁঠালিয়া উপজেলার ২৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের পুরোটাই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বিক্ষুব্ধ ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী অবশেষে তিনশতাধিক মানুষ বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করে।

বিষখালী নদীর হাত থেকে কাঁঠালিয়া উপজেলাকে রক্ষা করতে হলে ব্লক তৈরি করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বাঁধ নির্মাণ করতে আসা অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, ঝালকাঠি ১ আসনের সংসদ সদস্য, স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনেকবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বেড়িবাঁধের ৫ কিলোমিটার ভেঙে যায়। আমরা অন্তত লঞ্চঘাট এলাকার বেড়িবাঁধের কিছু অংশ স্বেচ্ছায় সংস্কার করে দিচ্ছি। কিন্তু এটা স্থায়ী কোনো সমাধান না, এখানে ব্লক ফেলে বাঁধ নির্মাণ করার দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় বাসিন্দা কাওছার আহম্মেদ জেনিভ বলেন, এলাকার মানুষের মুখের দিকে তাকানো যায় না, পানি উঠে তব কিছু তলিয়ে আছে। সবাই মিলে ভাল থাকতে হলে বেড়িবাঁধটি নির্মাণ খুবই জরুরি। তাই আমরা স্বেচ্ছায় বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। নিজেরাই পাশের একটি মাঠ থেকে মাটি কেটে বাঁধ সংস্কার করছি।

রাজাপুর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বদু সিকদার বলেন, এলাকার মানুষের একটাই সমস্যা, বেড়িবাঁধ। এই সমস্যার সমাধান কেউ করতে পারেনি। তাই গ্রামের মানুষ যার কাছে যা কিছু আছে, তাই নিয়ে বাঁধ নির্মাণের জন্য এসেছে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তারা সংস্কার করেছে। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো, দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকল্প করে বাঁধ নির্মাণ করে দেন। নইলে ক্ষতিগ্রস্তরা আন্দোলনে যাবে। আমরা আজকে মানববন্ধন করেছি। আগামীতে প্রয়োজনে বড় ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network