২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বিশ্বকাপ জয়ে আনন্দ বাঁধ ভেঙেছে অস্ট্রেলিয়ার

আপডেট: নভেম্বর ১৫, ২০২১

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের শেষ বাউন্ডারিটার পর রীতিমতো বুনো উদযাপন করল অস্ট্রেলিয়া। মিচেল মার্শ-ম্যাক্সওয়েল দুজন দুজনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন, বাকিরা ছুটে এসে লাফিয়ে পড়লেন তাঁদের ওপর। ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যান ফিঞ্চের চোখের কোণটা কি একটু ভিজে এলো? মাঠেই প্রতিক্রিয়া জানাতে এসে গলাটা ধরে এলো মার্কাস স্টয়নিস আর ম্যাথু ওয়েডেরও।

এই অস্ট্রেলিয়ার কাছে ট্রফি তো নতুন নয়। ওয়ানডের শিরোপা জেতাটা তো ডালভাত বানিয়ে ফেলেছে তারা। ক্রিকেট বিশ্বের এ-প্রান্তে ও-প্রান্তে ছড়ি ঘুরিয়ে অভ্যস্ত তাদের ক্রিকেটাররা। সেই অস্ট্রেলীয়দের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এই শিরোপা এভাবে আবেগে ভাসিয়েছে, কারণ এই প্রথম যে সংক্ষিপ্ততম এই ফরম্যাটে সেরার মুকুট পরল। ম্যাচ শেষে ওয়েড তো বলেই দিলেন, ‘আমাদের তো কেউ গোনায়ই ধরেনি এবার। কিন্তু আমরাই অস্ট্রেলিয়ার প্রথম দল, যারা এই টি-টোয়েন্টির শিরোপা জিতে নিলাম। এটা বিশাল অর্জন।’ এদিন ব্যাটিংয়েরই সুযোগ পাননি, তবু স্টয়নিসকে মনে হচ্ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ, ‘অসাধারণ এই দলটা। আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেককে ভীষণ ভালোবাসি। মার্শের এই ইনিংসে তার পরিবার আর আমাদের চেয়ে বেশি সুখী নয় আর কেউ।’ এদিন ৪ ওভারে ৬০ রান দেওয়ার বাজে রেকর্ড গড়া মিচেল স্টার্কও শিরোপার আনন্দে ভুলেছেন ব্যক্তিগত গ্লানি, টুর্নামেন্টজুড়ে অসাধারণ বল করে আসা অ্যাডাম জাম্পার প্রশংসায় মেতেছেন যিনি, ‘জাম্পা থাকায় আমাদের পেসারদের কাজটা অনেক সহজ হয়েছে। আমরা যা-ই করি ও ছিল ভীষণ ধারাবাহিক।’ ফাইনালে ৪ ওভারে মাত্র ২৬ রান দিয়েছেন এই স্পিনার।

আর ব্যাটিংয়ে জয়ের পথটা করে দিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার। টুর্নামেন্ট-সেরা হয়েছেন। সে পুরস্কার পেতে দারুণ আলোচনায় ছিলেন জাম্পাও। তবে অফ ফর্মে এই বিশ্বকাপে এসে যেভাবে আসরটা নিজের করে নিয়েছেন ওয়ার্নার, তা অতুলনীয়। সেমিফাইনালের পর ফাইনালেও গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলা অস্ট্রেলীয় এই ওপেনার বলছিলেন, কখনোই আত্মবিশ্বাস হারাননি তিনি। প্রশংসায় ভাসিয়েছেন দলের সতীর্থদের, ‘অসাধারণ এক দল এটা। প্রয়োজনের সময় ঠিকই নিজেদের নিংড়ে দিয়েছে সবাই।’ সমর্থকদের কাছেও তাঁর কৃতজ্ঞতা, ‘তারা সব সময়ই আমাদের তাড়না দিয়ে গেছে যেন এমন একটা কিছু সব সময় করতে পারি। সত্যি এটাই এগিয়ে দিয়েছে আমাদের।’ ম্যাচসেরা মিচেল মার্শ অভিভূত নিজের কীর্তিতেই। টুর্নামেন্টজুড়ে খুব যে ধারাবাহিক ছিলেন তা নয়। কিন্তু ফাইনালে ঠিক জ্বলে উঠলেন, ‘অবিশ্বাস্য, আমরা চ্যাম্পিয়ন! আনন্দটা বোঝানোর মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। সত্যি আমি ভীষণ গর্বিত এই দলটা নিয়ে।’

অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ প্রশংসায় ভাসিয়েছেন প্রায় সবাইকেই, ‘আমরাই প্রথম দল (অস্ট্রেলিয়ার), যারা এটা সম্ভব করলাম। দলীয় এবং ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স ছিল পুরো টুর্নামেন্টে। ওয়ার্নার যা করেছে এটা তো টুর্নামেন্টের শুরুতে কেউ মানতেই চায়নি। জাম্পা ছিল অসাধাণ। আমার টুর্নামেন্ট-সেরা সে-ই। আর মিচেল মার্শ, ফাইনালে ক্রিজে এসেই প্রতিপক্ষের ওপর যেভাবে চড়াও হয়ে খেলেছে, এর তুলনা হয় না। ভীষণ সুখী একজন মানুষ আমি এই মুহূর্তে।’ নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গী হয়েছে টানা দ্বিতীয় ফাইনাল হারের বিষাদ। তবে অস্ট্রেলিয়াকে অভিনন্দন জানাতে কার্পণ্য করেননি তিনি, ‘আমরা ব্যাটিংয়ে একটা লড়াকু পুঁজিই দাঁড় করিয়েছিলাম। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া দারুণভাবে ম্যাচটা বের করে নিয়েছে। আমাদের কোনো সুযোগই দেয়নি। তবে নিজেদের নিয়ে হতাশ নই এতটুকু, আমরা আমাদের সেরাটাই দিয়েছি।’

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network