২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

সৌদিতে বাংলাদেশী যুবকের আত্মহত্যায় বাড়িতে শোকের মাতম, লাশ ফেরতের আকুতি

আপডেট: ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

ছবি: আপডেট নিউজ বিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম

সৌদি আরবে বাংলাদেশী এক যুবকের গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় নিহতের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নিজেদের বড় ছেলেকে হারিয়ে কিছুতেই শান্তনা খুঁজে পাচ্ছেন না মাতা-পিতা। লাশটি যেনো দেশে ফেরত আনতে পারেন এটাই এখন তাদের একমাত্র চাওয়া। আত্মহত্যাকারী যুবক রিপন আলী (২৬) চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামের বসুতিপাড়ার আশাদুল হকের ছেলে।

নিহতের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৮শে ডিসেম্বর ২০২৩খ্রি.) দুপুরে সৌদি আরবে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন রিপন আলী। শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন নিহতের বাবা আশাদুল হক। খবর পেয়েই তিনি উথলী বাজারে তাঁর কাঁচামালের দোকান বন্ধ করে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে যান। বাড়িতে গিযে দেখেন পরিবারের লোকজনও আগেই খবর পেয়ে কান্নাকাটি করছে।

আশাদুল হক বলেন, আমার ছেলের সাথে সৌদি আরবে থাকা এক যুবক কয়েক মাস আগে বাড়িতে এসেছে। তাঁর বাড়ি কোটচাঁদপুর এলাকায়। সে আমাকে মোবাইলে কল করে ফোনটি পাশ্ববর্তী কাউকে দিতে বলে। আমি একজনকে ফোনটি দিলে সে জানায় সৌদি আরবে আমার ছেলে রিপন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

কি কারণে আত্মহত্যা করতে পারে এমন পশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কাজিরবেড় গ্রামের সুইটি নামের এক মেয়ের সাথে আমার ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। মেয়েটি আমাদের বাড়িতেও একবার এসেছে। তবে তাঁর সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত কিছু জানি না। ওই মেয়ের সাথে মনোমালিন্য হওয়ার কারণেই নাকি সে আত্মহত্যা করেছে বলে জানতে পেরেছি।

এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার ছেলে অত্যন্ত নরম-সরম। কারো সাথে তাঁর কোনো খারাপ সম্পর্ক নাই। কেউ তাকে হত্যা করবে এটা আমি বিশ্বাস করি না। ৪ বছর আগে সৌদি আরবে যাওয়ার পর বছর দুয়েক সে নিয়মিত টাকা পাঠাতো। পরবর্তী এক বছর অনিয়মিত এবং গত এক বছর ধরে সে টাকা পাঠাতো না। নিয়মিত আমাদের সাথে কথাও বলতো না। তবে আমি পুরাতন মোটরসাইকেল কিনবো এমন কথা শুনে গত শুক্রবার তাঁর টাকা পাঠানোর কথা ছিল। এর মাঝেই খবর পেলাম সে আত্মহত্যা করেছে। কারো প্রতি কোনো অভিযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কাউকে দোষারোপ করতে চায় না, কারো কাছে কোনো অভিযোগও করবো না। এখন আমার একটাই চাওয়া, আমি যেনো ছেলের লাশ দেশে ফিরিয়ে এনে নিজ গ্রামের মাটিতে দাফন করতে পারি।

উল্লেখ্য, প্রেমঘটিত সম্পর্কের কারণে সৌদি প্রবাসী রিপন আলী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। প্রেমিকার সাথে ভিডিও কলে কথা বলার সময় সে আত্মহত্যা করে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। তাকে খুঁজতে যেয়ে সহকর্মীরা পুরাতন ভবনের একটি কক্ষে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সে বিষয়েও জানা সম্ভব হয়নি। নিহত রিপন আলী সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের আল কাসিম ব্রদা এলাকায় একটি কৃষি খামারের কাজ করতেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে রিপন ছিল বড়ো। তাঁর ছোট ভাই মালয়েশিয়া প্রবাসী।

আমিনুর রহমান নয়ন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network