আপডেট: ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪
আপডেট নিউজ ডেস্ক:: একেক মানুষ একেক কাজে পারদর্শী। কেউ হয়তো ভালো গান করতে পারেন, আবার কারো হয়তো লেখার হাত ভালো, কিংবা কেউ হয়তো ভালো বক্তৃতা দিতে পারেন। আবার এমন অনেকেই আছেন যাদের বক্তৃতা দিতে হবে, এই কথা শোনার পর বুক ধক করে, পেট মোচড় দেয়। এই সময় তিনি অনেক নার্ভাস হয়ে পড়েন, যা কল্পনাও করা যায় না।
যিনি এই সমস্যার মুখোমুখি হননি, তার পক্ষে এই পরিস্থিতি উপলব্ধি করা সম্ভব না। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি অতীতে হয়তো কারো সামনে কথা বলার সময় অপমানিত, অসম্মানিত, উপহাসের পাত্র অথবা প্রত্যাখ্যাত হন। এরপর থেকে ভয় তীব্রভাবে তাঁর অবচেতন মনের বসে থাকে। ফলে পরবর্তীতে তিনি যখন জনসমক্ষে কথা বলতে যান, তখন তার মধ্যে অনেক বেশি মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা কাজ করে। ক্ষেত্র–বিশেষে তার মধ্যে প্যানিকও কাজ করে।
ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টারের সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া বলেন, ‘গ্লসোফোবিয়াতে রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি জনসমক্ষে কথা বলতে তীব্র ভয় পান। এটি একটি নির্দিষ্ট ধরনের ফোবিয়া, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ক্রমাগত ভয় পান। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত মানুষের সামনে কথা বলতে গেলেই ভয় পান এবং দুশ্চিন্তার ভোগান্তিতে পড়েন। এ কারণে তিনি জনসমক্ষে কথা বলা এড়িয়ে চলেন। তবে, একেকজনের ক্ষেত্রে একেক ধরনের ভয় কাজ করে।’
অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়ার মতে, গ্লসোফোবিয়া থেকে উত্তরণের কিছু উপায় হলো–
১. নিজের প্রতি ইতিবাক ধারণা পোষণ করা। নেতিবাচক ধারণা থেকে নিজেকে দূরে রাখা।
২. নিজেই নিজেকে উৎসাহ দেওয়া যে আপনি অবশ্যই পারবেন।
৩. যেসব বিষয় আপনার দুশ্চিন্তার কারণ, তা সঠিকভাবে চিহ্নিত করা।
৪. বক্তৃতা দেওয়ার আগে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করা।
৫. মন ভালো করার জন্য গান শোনা, বই পড়া।
৬. পরিবার এবং বন্ধুর কাছ থেকে সহযোগিতা নেওয়া।
৭. প্রয়োজনে মনোবিদের সহযোগিতা নেওয়া।
৮. ইউটিউব থেকে বিভিন্ন ধরনের রিলাক্সেশন পদ্ধতি দেখা যেতে পারে।
অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়ার মতে, এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি বাসা, স্কুল অথবা কর্মক্ষেত্রে মানুষের সামনে কথা বলতে গেলেই ভয় পান। যখনই তাঁকে জনসমক্ষে কথা বলতে বলা হয়, তখনই তার মধ্যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এই ধরনের ঘটনা চলমান থাকলে মানসিক স্বাস্থ্যেও খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। তাই মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হলে অবশ্যই মনোবিদের পরামর্শ নিতে হবে।