৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

শিরোনাম
গাজীপুরে পিস্তল-গুলি ও ৬ সহযোগীসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী গ্রেপ্তার শেষ স্প্যান স্থাপনে পূর্ণতা পেল গোমা সেতু : ডিসেম্বরে উদ্বোধন চরফ্যাশনে জুলাই ২৪’এর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারুণ্যের ভূমিকা’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতা ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা, সাড়ে ৫ মাস পর কবর থেকে আকাশের লাশ উত্তোলন একটি বাড়ি একটি রিসোর্ট : কুকরী মুকরীতে প্রফেসর কামাল উদ্দিন জীবননগর থেকে অপহৃত ৫ ব্যক্তি ঝিকরগাছা থেকে উদ্ধার বাকেরগঞ্জের কলসকাঠীতে ভেকু দিয়ে অবৈধভাবে সরকারি মাটিকাটার মহোৎসব গৌরনদী টুয়েন্টিফোর ডটকম-এর ১৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে র‍্যালি, কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বরিশালে জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত!

শেষ স্প্যান স্থাপনে পূর্ণতা পেল গোমা সেতু : ডিসেম্বরে উদ্বোধন

আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০২৫

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

মামুন-অর-রশিদ (ব্যুরো চিফ- দৈনিক বর্তমান): বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রাঙামাটি নদীর ওপর গোমা সেতুর সবশেষ স্প্যানটিও স্থাপন করা হয়েছে। ৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার এর মাধ্যমে সেতুর প্রাথমিক পূর্ণতা পেল। আগামী ডিসেম্বরেই জনচলাচলের জন্য উম্মুক্ত হতে পারে বহুল প্রতিক্ষীত এই সেতুটি।
গোমা সেতুর নির্মাণকাজে দেরির পেছনে মূল কারণ ছিল সেতুর উচ্চতা নিয়ে দুই সরকারি সংস্থার মতবিরোধ। ২০১৫ সালের ৩ নভেম্বর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর বিআইডব্লিউটিএর কাছে মতামত চেয়ে চিঠি পাঠায়। একই বছরের ১৫ ডিসেম্বর বিআইডব্লিউটিএ জানায়, বর্ষা মৌসুমের পানির উচ্চতা থেকে কমপক্ষে ৭ দশমিক ৬২ মিটার উঁচুতে সেতুটি নির্মাণ করতে হবে। সেই অনুযায়ী নকশা তৈরি করে দরপত্র আহ্বান ও নির্মাণকাজ শুরু হয়।
তবে ২০১৯ সালের ৮ মে বিআইডব্লিউটিএ নতুন এক চিঠিতে আগের অনুমোদন বাতিল করে জানায়, রাঙামাটি নদী এখন দ্বিতীয় শ্রেণির নৌপথ—এখানে বড় নৌযান চলাচল করবে। তাই সেতুর উচ্চতা বাড়িয়ে বর্ষা মৌসুমের পানির স্তর থেকে ১২ দশমিক ২০ মিটার করতে হবে। ফলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
তখন থেকেই এক দপ্তর বলছে পুরনো নকশায় ঝুঁকি নেই, আরেক দপ্তর বলছে নৌপথ বন্ধ হয়ে যাবে। এই টানাপোড়েনে থেমে যায় পুরো প্রকল্প।
বরিশাল জোনের তৎকালীন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শিশির কান্তি রাউৎ বলেছিলেন, উচ্চতা বাড়ালে ইতিমধ্যে সম্পন্ন হওয়া অংশে অতিরিক্ত চাপ পড়বে, যা নকশায় ধরা হয়নি। তাই বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে সমন্বয় করে সমাধান খোঁজা হচ্ছে। অন্যদিকে, বিআইডব্লিউটিএর দক্ষিণ বদ্বীপ অঞ্চলের তৎকালীন যুগ্ম পরিচালক এস. এম. আজগর আলী বলেছিলেন, নৌপথ সচল রাখতে সেতুটি ১২ দশমিক ২০ মিটার উঁচুতে নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পুরনো নকশায় কাজ চললে নৌপথ কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে।
২০১৮ সালে রাঙামাটি নদীর ওপর দুই হাজার ৫৪০ ফুট দীর্ঘ গোমা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। তিন বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় ছয় বছর পেরিয়ে গেছে। ব্যয়ও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, যা প্রাথমিক প্রাক্কলনের চেয়ে ৩৪ কোটির বেশি। এখনো নদী পারাপারে একটিমাত্র ফেরির ওপর নির্ভর করতে হয় এলাকাবাসীকে। প্রতি ঘণ্টায় একবার ফেরি চলে। কোনো কারণে ফেরি বন্ধ থাকলে ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে পার হন অনেকে।
চরাদি ইউনিয়নের বাসিন্দা সোহাগ হাওলাদার বলেন, ‘রোগী অসুস্থ হলে সহজে এপার থেকে ওপারে নেওয়া যায় না।’ আরেকজনের মন্তব্য, ‘ফেরি গেলে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়, সেতু থাকলে দুই মিনিটেই যাওয়া যেত।’
সওজের তথ্য অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ে সেতুর ৪৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছিল। কিন্তু উচ্চতা নিয়ে বিআইডব্লিউটিএর আপত্তির পর পুরো প্রকল্প থমকে যায়। পরে নকশা পরিবর্তন ও নতুন বাজেট অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় কেটে যায় আরও দুই বছর। সম্প্রতি একনেক সভায় নতুন নকশা অনুমোদনের মাধ্যমে প্রকল্পটি আবার গতি পেয়েছে।
বরিশাল সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘নদীর ধারা পরিবর্তন ও জমি অধিগ্রহণের কারণে বারবার নকশা পরিবর্তন করতে হয়েছে। এখন কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। মঙ্গলবার একটি স্প্যান বসানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় স্প্যান বসাতে পারব। আশা করছি ডিসেম্বর মাসেই সেতুটি চালু করতে পারব।’

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network