আপডেট: নভেম্বর ৫, ২০২৫
ছবি: আপডেট নিউজ বিডি টোয়েন্টিফোর
জীবননগর থেকে অপহরণ হওয়া ৫ ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল, ডিবি ও পুলিশ সুপারের বিশেষ টিম বুধবার (৫ই নভেম্বর) ভোরে যশোরের ঝিকরগাছা থানার হাজিরবাগ ইউনিয়নের কুল্লা গ্রামে অভিযান চালিয়ে রেজাউলের খামারবাড়ির গোডাউন থেকে তাদের উদ্ধার করেন।
অপহরণের পর তাদেরকে খামারবাড়ির গোডাউনে আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করাসহ শফিকুল ইসলাম নামে একজনের ৪টি আঙ্গুল কেটে দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, গত ১১ই অক্টোবর চুয়াডাঙ্গার জীবননগর সীমান্ত দিয়ে স্বর্ণের একটি বড় চালান ভারতে পাচার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাচারকারীদের পূর্ব পরিকল্পনায় সীমান্ত এলাকা থেকে চালানটি আত্মসাৎ হয়ে যায়। ওইদিন সীমান্ত এলাকায় মাঠে কাজ করছিলেন গোয়ালপাড়া গ্রামের মোমিন হোসেনের ছেলে স্বপন হোসেন (৪০), শওকত আলীর ছেলে হাসান মিয়া (২৭) ও আতিয়ার রহমানের ছেলে আবুল হোসেন (৩০)। তারা ঘটনাটি দেখে ফেলায় ১৩ই অক্টোবর সকালে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর তাদেরকে অপরহণ করা হয়। এর আগেন দিন সন্ধ্যায় অপহরণ হয় স্বর্ণ পাচারকারী চক্রের সদস্য শফিকুল ইসলাম (৩০) ও তার পিতা আনারুল ইসলাম (৫২)। স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটের মদদে তাদেরকে অপহরণ করা হয় বলে জানা গেছে।
ঘটনার বেশ কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও ওই ৫ ব্যক্তির কোনো খোঁজ না পেয়ে নিখোঁজ হাসানের পিতা শওকত আলী বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ ৩/৪ জনকে অজ্ঞাতনামা করে জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে ২১শে অক্টোবর সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। মামলার পরেও ওই অপহৃত পাঁচজন উদ্ধার না হওয়ায় তাদের উদ্ধারের দাবিতে ১লা নভেম্বর সকাল ১১টার দিকে জীবননগর মুক্তমঞ্চে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
মানববন্ধনের পর ৪ঠা নভেম্বর দুইজনকে আটক করে জীবননগর থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়। ৫ই নভেম্বর ভোরে অপহৃত ৫ ব্যক্তিকে যশোরের ঝিকরগাছা থানার হাজিরবাগ ইউনিয়নের কুল্লা গ্রামে অভিযান চালিয়ে রেজাউলের খামারবাড়ির গোডাউন থেকে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।
এসময় খামারবাড়ির মালিক রেজাউল ইসলাম ও আব্দুল গফফার আগেই পালিয়ে যায়। তবে খামারবাড়ি হতে গ্রেফতারপূর্বক তিনজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তারা হলেন ঝিকরগাছা থানার শিমুলিয়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে বিল্লাল হোসেন (৪০), বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী সাগরিকা খাতুন এবং কুল্লা গ্রামের রঞ্জন দেবনাথের ছেলে বিকাশ দেবনাথ (৩০)।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল আল নাসের (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) অপহৃত ৫ ব্যক্তিকে উদ্ধার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, একথা বলার অপেক্ষা রাখে না চুয়াডাঙ্গার জীবননগর সীমান্ত স্বর্ণ চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। নিয়মিত এ রুট দিয়ে স্বর্ণ ভারতে পাচার হলেও তা উদ্ধার করতে ব্যর্থ হচ্ছে বিজিবি ও পুলিশ। তবে ভুল-ভবিষ্যৎ দুই-একজন স্বর্ণ পাচারকারী আটক হলেও সিন্ডিকেটের মূলহোতারা বরাবরই থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আমিনুর রহমান নয়ন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার।

