৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বরগুনায় থানা থেকে জব্দকৃত জাটকা ইলিশ লুট

আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০২৫

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

বরগুনা প্রতিনিধি:: নৌবাহিনী ও উপজেলা মৎস্য বিভাগের জব্দকৃত ১,৫০০ কেজি জাটকা ইলিশ মাছ বরগুনার আমতলী থানা থেকে লুট হয়েছে। প্রকাশ্যে দিবালোকে এমন ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। জাটকা ইলিশ লুট হওয়ার ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় ওঠে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবী করেছেন স্থানীয়রা।

এমন আলোচিত ঘটনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খাঁন জানেন না বলে দাবি করেছেন। ঘটনা ঘটে বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে।জানা গেছে, গত ১ নভেম্বর থেকে সাগর ও নদীতে জাটকা ইলিশ শিকার করা নিষিদ্ধ। কিন্তু তালতলী, কলাপাড়া ও আমতলী উপজেলার অসাধু জেলেরা সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে অবাধে মাছ শিকার করছেন। জেলেরা শিকার করা জাটকা ইলিশ বৃহস্পতিবার দুপুরে চারটি পরিবহন গাড়িতে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাচার করছিল। ওই মাছ নৌবাহিনীর সদস্য ও উপজেলা মৎস্য বিভাগ জব্দ করে। জব্দকৃত মাছ তারা আমতলী থানায় মজুদ রাখেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে ওই মাছ স্থানীয় ৫০টি এতিম খানায় বিতরণ করার সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ দুই শতাধিক মানুষ থানা কম্পাউন্ডের ভিতরে প্রবেশ করে এবং সমুদয় মাছ লুট করে নিয়ে যায়।

প্রকাশ্যে দিবালোকে থানার মধ্যে এভাবে মাছ লুট হওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সাধারণ মানুষ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, “পুলিশের সামনে জাটকা ইলিশ লুট হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। রাজনৈতিক দলের লোকজন মাছ লুট করেছে। উপজেলা প্রশাসন যদি সঠিকভাবে মাছ বিতরণ করতো, এমন হতো না। তাদের গাফিলতির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে।”

তারা আরও জানান, বুধবার রাতেও জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়েছিল, কিন্তু উপজেলা প্রশাসন পরিবহন গাড়ি ও জব্দকৃত মাছের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। ফলে থানায় এমন ঘটনা ঘটেছে। তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী গাজী নাসির উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন বলেন, “পুলিশের সামনে থেকে জব্দকৃত জাটকা ইলিশ লুট হওয়া খুবই দুঃখজনক। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। উপজেলা প্রশাসন যদি সঠিকভাবে ব্যবস্থা নিত, এমন হতো না।”তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি করেছেন।

বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তন্ময় কুমার বলেন, “আমি প্রশিক্ষণে আছি। জব্দকৃত ১,৫০০ কেজি মাছ ৫০টি এতিম খানায় বিতরণের সময় অপরিচিত শতাধিক লোক এসে মাছ লুট করে নিয়েছে।”

আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, “জব্দকৃত অর্ধেক মাছ সঠিকভাবে বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বাকী অর্ধেক মাছ মানুষ নিয়ে গেছে। আমি ঠেকানোর চেষ্টা করেও পারিনি।”আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। থানা একটি সুরক্ষিত জায়গা, সেখান থেকে মাছ লুট হওয়ার প্রশ্নই আসে না। তারপরও যদি লুট হয়ে থাকে, জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
error: এই সাইটের নিউজ কপি বন্ধ !!
Website Design and Developed By Engineer BD Network